জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র
রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় জামিন চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানিতে জামিনের বিরোধিতা করে আদালতের কাছে সময় চাইল ইডি। বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে চার দিন সময় দিয়েছেন। আগামী মঙ্গলবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে জ্যোতিপ্রিয়ের পরিবার একাধিক বার আদালতে জামিনের আবেদন জানিয়েছে। কিন্তু এখনও বালুর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেনি আদালত। ১৬ ফেব্রুয়ারি তাঁকে রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে সরানো হয়। তৃণমূলের একটি সূত্র মারফত জানা যায়, জামিন পেতেই তাঁর পরিবার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জ্যোতিপ্রিয়কে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানোর আবেদন জানিয়েছিল। সেই আবেদনে সারা দিয়েই ফেব্রুয়ারি মাসে মন্ত্রিত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে জ্যোতিপ্রিয়কে। কিন্তু এখনও জামিন মেলেনি।
গত এপ্রিলে প্রবল দাবদাহের কারণে প্রেসিডেন্সি জেলেই অসুস্থ হয়ে পড়েন জ্যোতিপ্রিয়। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে ডেকে পাঠানো হয় জেলের চিকিৎসকদের। এমনিতেই সুগার এবং প্রেশারজনিত সমস্যায় দীর্ঘ দিন ধরে ভুগছেন তিনি। তার উপর অত্যধিক গরমে তাঁর শারীরিক অবস্থা খারাপ হয় বলেই জেল সূত্রে খবর।
গত এপ্রিলে রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে তৃতীয় অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দেয় ইডি। সেখানে বালু ‘ঘনিষ্ঠ’ ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ দাস এবং তাঁর বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় সংস্থার বিরুদ্ধে দাবি করা হয়, ২০১৪-১৫ সালে রেশন দুর্নীতির ৩৫০ কোটি টাকা দুবাইয়ে পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ হয়ে হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা পাচারের অভিযোগও করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাদের আরও দাবি, এই মামলায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের ১১টি সম্পত্তি ‘অ্যাটাচড’ হয়েছে। ২০০০ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যের কর্মচারী ছিলেন বিশ্বজিৎ। তার পর কাজ ছেড়ে দেন। সল্টলেক থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, বালুর মাধ্যমে টাকা শঙ্করকে পৌঁছে দিতেন বিশ্বজিৎ। শঙ্করের কাছে বালুর যে টাকা পৌঁছত, তা হাওয়ালার মাধ্যমে বিদেশি মুদ্রায় বদলে ফেলা হত। পাচার করে দেওয়া হত দুবাইয়ে। সেই কাজেও প্রত্যক্ষ ভাবে সহযোগিতা করতেন বিশ্বজিৎ। ইডি দাবি করে, বালুর যে ২০০০ কোটি টাকা শঙ্করের মাধ্যমে দুবাই পাঠানো হয়েছে, সেই টাকার একটা অংশ দুবাইয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন বিশ্বজিৎ।