নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে আক্রান্ত ইডি আধিকারিক। — নিজস্ব চিত্র।
সন্দেশখালিকাণ্ডের সাক্ষী আরও এক ইডি আধিকারিক বৃহস্পতিবার নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের দফতরে এসেছেন। তাঁর নাম অঙ্কুর গুপ্তা। ইডির কলকাতার দফতরেই তিনি কর্মরত। সন্দেশখালিতে শাহজাহান শেখের ‘অনুগামী’দের হাতে মার খেয়েছিলেন এই অঙ্কুর। হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তাঁকে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজামে পৌঁছেছেন তিনি। আক্রান্ত ইডি আধিকারিকের বয়ান নথিভুক্ত করতে পারে কেন্দ্রীয় সংস্থা।
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে সন্দেশখালিকাণ্ডের তদন্ত করছে সিবিআই। শাহজাহানকে বুধবারই তারা ভবানী ভবন থেকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে। এর আগে শাহজাহান রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডির হেফাজতে ছিলেন। শাহজাহানকে হেফাজতে পাওয়ার পরেই তদন্তে গতি এনেছে সিবিআই। রাতেই তাদের একটি দল কেন্দ্রীয় বাহিনী সঙ্গে নিয়ে সন্দেশখালিতে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চলছে তথ্য সংগ্রহের কাজ।
সকালে সিবিআই দফতরে গিয়েছিলেন ইডির ডেপুটি ডিরেক্টর গৌরব ভারিল। সন্দেশখালিতে ইডির উপর হামলার ঘটনায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে মূল অভিযোগকারী ছিলেন ইডির এই শীর্ষ পদাধিকারী। তিনি এখনও নিজাম প্যালেসেই রয়েছেন। সিবিআই সূত্রে খবর, প্রত্যক্ষদর্শী এই ইডি আধিকারিকদের কাছ থেকে সে দিনের ঘটনার বর্ণনা শুনছে তদন্তকারী সংস্থা। শাহজাহানকে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। গৌরবের বয়ান অবশ্য এর আগে রাজ্য পুলিশ নথিভুক্ত করতে চেয়েছিল। পুলিশের তদন্তকারীরা কলকাতায় ইডির দফতর সিজিও কমপ্লেক্সেও গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি জানান, তিনি ব্যস্ত রয়েছেন। তাঁকে দু’বার তলব করেছিল সিআইডি-ও। সেই গৌরবই বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতার সিবিআই দফতরে গিয়েছেন।
গত ৫ জানুয়ারি ইডি রেশন ‘দুর্নীতি’কাণ্ডের তদন্তে সন্দেশখালিতে গিয়েছিল। শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে বাধা পায় তারা। শাহজাহানের বাড়ির সামনে তাদের মার খেতে হয়েছিল। বাড়িতে ইডি ঢুকতেই পারেনি। শাহজাহানের দেখাও মেলেনি। অভিযোগ, তিনিই বাড়ির ভিতর থেকে অনুগামীদের ফোন করে ইডিকে মার খাইয়েছিলেন। পরে পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যান। সেই থেকে শাহজাহান ‘নিখোঁজ’ ছিলেন। ৫৫ দিন পরে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি তাঁকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তার আগে শাহজাহান এবং তাঁর অনুগামী সন্দেশখালির স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের গ্রেফতারি চেয়ে পথে নেমেছিলেন গ্রামবাসীরা। দিনের পর দিন সন্দেশখালির মহিলাদের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছিল পরিস্থিতি। শাহজাহানদের বিরুদ্ধে এলাকায় অত্যাচার, জমি জবরদখল, নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই।