কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। —ফাইল চিত্র।
তিনি নিয়োগ মামলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সুতো— এমনটাই দাবি করেছিল ইডি। অথচ এককালে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরের কর্মী ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের হাত গলে কোথাকার টাকা কোথায় যেত, তার ঠিকানা খুঁজে পাচ্ছিলেন না তদন্তকারীরা। এই প্রথম সুজয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি বেআইনি আর্থিক চক্রের সন্ধান মিলেছে বলে ইডি সূত্রে খবর। এমনকি, ওই আর্থিক লেনদেনের সূত্র ধরে শহরের এক ‘নামী’ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের উপরেও ইডির নজর পড়েছে বলে জানা গিয়েছে ওই সূত্রে।
কে ওই চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট? তাঁর নাম না জানালেও ইডি সূত্রে খবর, কাকুর সঙ্গে যুক্ত যে সমস্ত কোম্পানি এই মুহূর্তে তদন্তের আওতাভুক্ত, তার তল্লাশি চালাতে গিয়েই খোঁজ মিলেছে ওই অ্যাকাউন্ট্যান্টের । ইডি জানতে পেরেছে, বিভিন্ন সময়ে শেয়ার লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়ে ওই চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে কাকুর সঙ্গে যুক্ত সংস্থার।
ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, সুজয়ের সঙ্গে নানা বেআইনি কার্যকলাপে যুক্ত ছিলেন তিনি। এমনকি, সুজয়ের সংস্থার শেয়ারদর ১০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৪০ টাকা করতেও তিনি সাহায্য করেছিলেন। ইডি সূত্রে খবর, ক্যামাক স্ট্রিটের এক নির্মাণ সংস্থার মালিককে হুমকি দিয়ে ছ’টি সংস্থার মাধ্যমে ঘোরানো হয় সুজয়ের টাকা। তার পরে প্রায় ৪৪ গুণ বেশি দামে বিক্রি হওয়া শেয়ারের টাকা কোম্পানির অ্যাকাউন্টে জমা হত।
বুধবার ইডির নজরে থাকা সুজয়ের সঙ্গে যুক্ত বেশ কিছু সংস্থার দফতরে তল্লাশি চালিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। সেখানেই তাঁরা জানতে পারেন, ওই সব ক’টি সংস্থাই আসলে জাল কোম্পানি। প্রত্যেকটিরই দফতর পার্ক স্ট্রিটের আপার উড স্ট্রিটে। এর মধ্যে আবার একটি সংস্থার ডিরেক্টর ছিলেন ওই চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টও। কোভিড পরিস্থিতির আগে পর্যন্ত তিনি এবং তাঁর পুত্র ডিরেক্টর পদে ছিলেন। পরে মালিকানা বদলায়। ইডি সূত্রে খবর, শীঘ্রই ওই অ্যাকাউন্ট্যান্টকে তলব করার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। ইতিমধ্যেই এ সংক্রান্ত বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে, নথিও উদ্ধার হয়েছে।