প্রশ্ন উঠেছে, ইডি কেন সরকারি আমলাদের বার বার ডাকছে? ছবি: সংগৃহীত।
মেট্রো ডেয়ারির শেয়ার হস্তান্তর মামলায় অর্থসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী-সহ চার আমলার বক্তব্য জানার জন্য ডেকেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট(ইডি)। প্রশ্ন উঠেছে, ইডি কেন সরকারি আমলাদের বার বার ডাকছে? এর মাধ্যমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ অফিসারদের ভয় দেখানো কি ইডি-র একমাত্র লক্ষ্য? এটা কি তদন্তের অভিমুখ রাজনৈতিক কারণে ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্যই করা হচ্ছে?
নবান্নের যুক্তি, প্রখ্যাত নিরীক্ষণ সংস্থার ঠিক করে দেওয়া বাজার মূল্যে মেট্রো ডেয়ারি বিক্রি করে দেওয়ার পর সরকারের কোনও দায় নেই। ফলে যে সংস্থা মেট্রো কিনেছিল, সেই কেভেন্টার্স কী দামে, কাকে কত শেয়ার বিক্রি করেছে, তা তারাই বলতে পারবে। সরকারকে জড়িয়ে প্রতিহিংসার রাজনীতি হচ্ছে।
সম্প্রতি শহরের একটি বণিকসভার সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে ছিলেন সংশ্লিষ্ট বেসরকারি সংস্থার কর্ণধারও। ঘটনাচক্রে সেদিনই ইডি-র তরফে নবান্নে যোগাযোগ করে নোটিস দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: হঠাৎ হাজির ভারতী, জঙ্গলমহলে জল্পনা
আমলাদের একাংশের প্রশ্ন, ওই বেসরকারি সংস্থার কর্ণধারকে কেন ডাকছে না ইডি? ইডি-র এক কর্তার কথায়, ‘‘সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্ণধার ও প্রতিনিধিদের কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ওই সংস্থায় তল্লাশি চালিয়ে জরুরি নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেই সূত্রেই আমলাদের ডাকা হয়েছে। কেভেন্টার্সকেই মেট্রো বিক্রি করে দেওয়ার চাপ ছিল কি না, তা জানতে চাওয়া হবে।’’ সংশ্লিষ্ট কর্ণধারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: ‘টিম বাবুল’কে ঘিরে জলঘোলা বিজেপিতে
ইডি’র এক শীর্ষ কর্তা জানাচ্ছেন, সরকারি আমলাদের তদন্তের অন্তিম পর্যায়ে ডাকা হচ্ছে। যদি তাঁদের কোনও ভূমিকা না থাকে, তাহলে তাঁরা তা জানিয়ে দেবেন। এর মধ্যে কোনও জটিলতা নেই। আর্থিক অপরাধের অভিযোগের মামলায় কাগজপত্র এবং সিদ্ধান্তগ্রহণের প্রতিটি স্তর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। সেই কারণেই চার আমলার বক্তব্য জানা প্রয়োজন। মোট ২৯টি প্রশ্ন জানতে চাওয়া হয়েছে। সেগুলির জবাব পেলে ইডি পরবর্তী পদক্ষেপ করবে।
প্রশ্ন উঠেছে, মেট্রো সরকারের হাত থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর নবান্নের দায় থাকবে কেন? ইডি’র শীর্ষ কর্তার কথায়,‘আজকের দিনে সরকারের মেট্রো নিয়ে কিছু বলার নেই। তা বেসরকারি হাতে চলে গিয়েছে। কিন্তু হঠাৎ সরকার এমন একটি লাভজনক সংস্থা কেনই বা বিক্রি করে দিয়েছিল, সেটা জানতেই তো তদন্ত হচ্ছে। আদালত তেমনই নির্দেশ দিয়েছে।’’ ইডি-র প্রশ্ন, উপযুক্ত জায়গায় বিজ্ঞাপন দিয়ে সরকার কি ক্রেতা খুঁজেছিল? প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরের চার আমলার ফাইলের বক্তব্য চার রকম কেন? দুগ্ধ ফেডারেশনের কর্তারা যা জানিয়ে গিয়েছেন, দফতরের সচিবদের বক্তব্য তার সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ হয় কি না তাও দেখা হবে বলে জানান ওই ইডি কর্তা।