শাহজাহান শেখ। — ফাইল চিত্র।
শাহজাহান শেখের বিরুদ্ধে জমি দখলের মামলায় এখনও পর্যন্ত ২৬০ কোটি টাকার হদিস মিলেছে। আদালতে এমনটাই দাবি করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তাদের আরও দাবি, দুর্নীতির মাধ্যমে জমি, ভেড়ি, নগদ সম্পত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে শাহজাহানের।
সোমবার কলকাতার বিচার ভবনে শাহজাহান, আলমগির, শিবপ্রসাদ হাজরা, দিদার বক্স মোল্লাকে হাজির করানো হয়। ইডির আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী আদালতে দাবি করেন, শাহজাহানের বিরুদ্ধে জমি দখলের এই মামলায় ‘প্রসিড অফ ক্রাইম’ হিসাবে এখনও পর্যন্ত ২৬০ কোটি টাকার সম্পত্তি চিহ্নিত করেছে ইডি। ‘প্রসিড অফ ক্রাইম’ বলতে বোঝায়, দুর্নীতির মাধ্যমে যা আয় করা হয়। ইডির দাবি, ভয় দেখিয়ে, জমি দখল করে সন্দেশখালিতে ২৬০ কোটি টাকার সম্পত্তি করেছেন শাহজাহান।
স্ত্রী সন্তানসম্ভবা হওয়ায় সোমবার জামিনের আবেদন করেন আলমগির। তাঁর আইনজীবী জানান, তাঁর স্ত্রীকে বাড়িতে দেখাশোনার কেউ নেই। তা ছাড়া আলমগিরের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ফলে তাঁর স্ত্রীর হাতে এখন টাকাপয়সারও অভাব। ইডির আইনজীবী এই দাবি মানেনি। তিনি জানিয়েছেন, আলমগিরের বাড়িতে পরিবারের অন্য সদস্যেরা থাকেন। আলমগিরের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লেনদেন বন্ধ করা হয়নি। ইডি জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে। এর পর আদালত তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়।
রেশন দুর্নীতি মামলায় প্রথম শাহজাহানের নাম জড়িয়েছিল। গত জানুয়ারি মাসে তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়েছিল ইডি। কিন্তু কেন্দ্রীয় আধিকারিকদের মার খেয়ে ফিরতে হয়েছিল শাহজাহানের ডেরা থেকে। তার পর থেকে তিনি নিজেও উধাও হয়ে গিয়েছিলেন। প্রায় দু’মাস পর শাহজাহানকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশ। তার পর আদালতের নির্দেশে তাঁকে তুলে দেওয়া হয় সিবিআইয়ের হাতে। সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন ইডিও শাহজাহানকে গ্রেফতার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে সন্দেশখালিতে সাধারণ গ্রামবাসীদের উপর অত্যাচার, জমি জবরদখল, মাছের ব্যবসার আড়ালে দুর্নীতির মতো একাধিক গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। গ্রেফতারির পর শাহজাহানকে ছ’বছরের জন্য দল থেকে সাসপেন্ড করে তৃণমূল।