(বাঁ দিকে) নলিনী চিদম্বরম এবং সুদীপ্ত সেন (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
সারদা মামলায় আইনজীবী তথা আয়কর পরামর্শদাতা নলিনী চিদম্বরমের বিরুদ্ধে পেশ করা চার্জশিটের গ্রহণের শুনানিতে ফের বিচারকের প্রশ্নের মুখে পড়ল ইডি। শুক্রবারও বিচার ভবনের সিবিআই আদালতের বিচারক প্রশান্তকুমার মুখোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, আইনি পরামর্শ দিয়ে টাকা নেওয়ায় কী ভাবে নলিনীর বিরুদ্ধে অপরাধের তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত হল? এ ক্ষেত্রে ইডি-র ব্যাখ্যাও তলব করেছেন তিনি। বিচারকের নির্দেশ, নলিনীর সম্পর্কে ইডি-কে একটি সংক্ষিপ্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে। ২৫ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানি।
৫ জুলাই সারদা মামলায় প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের স্ত্রী তথা আইনজীবী নলিনীর বিরুদ্ধে ইডি ৬৫ পাতার তৃতীয় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট-সহ এক হাজার পাতার নথি বিচার আদালতে পেশ জমা দিয়েছিল। সেই দিনই বিচারক প্রশ্ন আইনি পরামর্শদাতা নলিনীর বিরুদ্ধে অপরাধের প্রমাণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। কেন মামলার ১১ বছর পর চার্জশিট পেশ করা হচ্ছে, তা-ও জানতে চান। সে দিনই বিচারক জানান, এ ব্যাপারে শুনানির পরে চার্জশিট গ্রহণ হবে কি না, তা স্থির করা হবে।
এ দিন মামলার শুনানিতে বিচারক বলেন, ‘‘আর্থিক দুর্নীতির ক্ষেত্রে সুদীপ্ত সেনের অপরাধ প্রতিষ্ঠিত। তবে আইনি পরামর্শ বাবদ টাকা নেওয়ার জন্য নলিনী চিদম্বরমের ক্ষেত্রে অপরাধ কী ভাবে প্রতিষ্ঠিত হল, তার ব্যাখ্যার প্রয়োজন আছে।’’ ইডি-র আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র জবাব দেন, ওই মামলায় আর এক অভিযুক্ত মনোরঞ্জনা সিংহ ও সুদীপ্ত সেনের মধ্যে বৈদ্যুতিন সংবাদ সংস্থা খোলার জন্য ২০১০ সালে একটি চুক্তি হয়েছিল। মনোরঞ্জনার সঙ্গে নলিনীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। ২০১০ সালে বাজার থেকে অনুমতি না নিয়ে আমানতকারীদের কাছ থেকে টাকা তোলার অভিযোগে সেবি সারদা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। সে বছরই মনোরঞ্জনার মাধ্যমে সুদীপ্তর সঙ্গে নলিনীর সাক্ষাৎ হয়। কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেলে নলিনী, সুদীপ্ত, মনোরঞ্জনা ও সেবির প্রাক্তন তিন কর্তার সঙ্গে একাধিক বার বৈঠকও হয়। ২০১০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সুদীপ্তর কাছ থেকে চেক মারফত দফায় দফায় প্রায় দেড় কোটি টাকা নিয়েছিলেন নলিনী। তদন্তের সময় নলিনীর কাছে পারিশ্রমিক নেওয়ার নথি চাওয়া হলেও তিনি দেননি।
ইডি-র আইনজীবীদের দাবি, সারদা বাজার থেকে বেআইনি ভাবে আমানত সংগ্রহ করেছিল। তার একাংশ সুদীপ্ত ও নলিনীর মধ্যে লেনদেন হয়েছিল। সে ক্ষেত্রে প্রিভেনশন অফ মানিলন্ডারিংয়ের ধারায় অপরাধ বলে মনে করা হচ্ছে। ১১ বছরের বিলম্ব নিয়ে ইডি-র দাবি, উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী তদন্ত করতে গিয়ে সময় লেগেছে। তাই কয়েক বছর দেরি হয়েছে।