ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো নিয়ে ফের চাপান-উতোর শুরু হল কলকতা পুরসভা আর মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের।
এ বার উপলক্ষ মেয়রকে দেওয়া ইস্ট-ওয়েস্ট কর্তৃপক্ষের একটি চিঠি। তাতে মেট্রো রেলের সুপারিশ, বিবাদী বাগ এলাকায় ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো রেলের কাজ শুরু হওয়ার আগে ২৫টি বাড়ির বাসিন্দাদের অন্যত্র সরাতে হবে। আর সেই কাজ করে ফেলতে হবে জুন মাসের মধ্যেই।
মেট্রো কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, বিবাদী বাগ এলাকায় ওই প্রকল্পের কাজ শুরু হলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ব্রেবোর্ন রোড, পুরুষোত্তম রায় রোড, স্ট্র্যান্ড রোড, আর্মেনিয়ান রোড, নেতাজি সুভাষ রোড সংলগ্ন গোটা ২৫টি বাড়ি। বিপদ এড়াতেই ওই সব বাড়ির বাসিন্দাদের সরানোর সুপারিশ করেছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
ওই চিঠি পেয়ে পুর-কর্তৃপক্ষ হতবাক। তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, হঠাৎ করে ২৫টি বাড়ির বাসিন্দাদের সরানোর যে সুপারিশ মেট্রো রেল করেছে, তা তাঁদের পক্ষে কার্যকর করা কার্যত অসম্ভব। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘একাধিক বার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো নিয়ে আমাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তখনও এই প্রসঙ্গ ওঠেনি। এখন হঠাৎ করে বলা হচ্ছে, জুনের মধ্যে সকলকে সরাতে হবে। এটা সম্ভব নয়।’’ এর মধ্যেই মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার বিশ্বেশ চৌবে সোমবার বলেন, ‘‘বিষয়টি রাজ্য সরকার দেখছে।’’
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের কাজ নিয়ে সল্টলেকেও সমস্যা হয়েছিল। সেখানে প্রায় ৮০টি পরিবারকে সরানো নিয়ে দীর্ঘকাল টালবাহানা চলে। তাতে প্রায় বছর দুয়েক মেট্রোর কাজ আটকে ছিল। পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে সেই জট কাটে। যাঁদের সরানো হয়েছিল, সম্প্রতি রাজ্য সরকারের দেওয়া জমিতে ফ্ল্যাট বানিয়ে তাঁদের পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে।
তবে এ বারের এই সমস্যার জন্য প্রস্তুত ছিল না পুরসভা। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ক্ষতিপূরণের কী হবে, ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি কারা মেরামত করবে— এ সব নিয়ে মেট্রো কোনও আলোচনাই করেনি।’’ অলোচনা ছাড়া কী ভাবে এ সব কাজ সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
মেট্রো রেলের পক্ষ থেকে বলা হয়, ওই অঞ্চলে কয়েকটি বাড়ির এমন অবস্থা যে মেট্রোর মাটির তলার কাজ শুরু হলেই সেগুলির মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। ওই বাড়িগুলি চিহ্নিত করে বাসিন্দাদের সরাতে বলেছি আমরা।’’