মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
শিক্ষার অধিকারের জন্য, কাজের দাবিতে সমাবেশ হবে ব্রিগেডে। বামপন্থী মনোভাবাপন্ন নন, এমন তরুণ-তরুণীদেরও আগামী ৭ জানুয়ারি কাজের দাবির সমাবেশে আসার আহ্বান জানাল ডিওয়াইএফআই। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের দাবি, নতুন করে বাংলা গড়ার লক্ষ্যেই তাঁদের লড়াই। নিজেদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সকলেই সেই লড়াইয়ে অংশীদার হতে পারেন।
তিন বছর আগে বিধানসভা ভোটের মুখে ব্রিগেড সমাবেশ উপলক্ষে ‘থিম সং’ তৈরি করেছিল সিপিএম। এ বার দলের যুব সংগঠনও ব্রিগেডের যুব সমাবেশ সামনে রেখে ‘থিম সং’ প্রকাশ করেছে। সমাবেশের প্রস্তুতি দেখতে বৃহস্পতিবার ডিওয়াইএফআইয়ের মীনাক্ষী, কলতান দাশগুপ্তদের সঙ্গে ব্রিগেড ময়দানে গিয়েছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্দ সেলিম। তাঁর মতে, ‘দাঙ্গাবাজ ও দুর্নীতিবাজ’, দুই শক্তিকে হটাতেই লড়াই চলছে বাংলায়। ‘কালীঘাটের কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ নিয়ে যে লম্বা টানাপড়েন চলেছে, সেই সূত্র ধরে সেলিমের মন্তব্য, ‘‘কাকুর কণ্ঠস্বর নিতে যদি এত দিন সময় লাগে, তা হলে পিসির কণ্ঠস্বর বন্ধ করতে কত দিন লাগবে? কালীঘাটের পিসি, যার চোরের মায়ের বড় গলা, তাঁর আওয়াজ কমাতেই রবিবারের ইনসাফ সমাবেশ।’’ রাজ্যে যে শ্রমিকেরা কাজ পান না, মজুরি পান না, তাঁদের অসহায়তা দূর করতেও যুবরা লড়াই করছে এবং ব্রিগেড সমাবেশ তার অংশ বলে উল্লেখ করেছেন সেলিম।
পরে পানিহাটিতে এ দিনই রাতে ব্রিগেডের প্রস্তুতি উপলক্ষে সভায় মীনাক্ষীও বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গ থেকে সস্তার শ্রম অন্য রাজ্যে যাক, এই লক্ষ্যেই বিজেপি ও তৃণমূল চলছে। ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদকের দাবি, ‘‘সরকারের দায়িত্ব কাজ শেখানো, শিক্ষা দেওয়া কিন্তু এই রাজ্যে সরকার ৮ হাজারের উপরে স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে। মেধাবীদের স্থান গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বসে থাকা নয়। স্কুল-কলেজ, কারখানায় যুবক-যুবতীদের স্থান কোথায়? পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আয় হচ্ছে মদ বিক্রি থেকে। তাই মদের দাম সস্তা করে দিয়েছে। ঠিকা শ্রমিক তৈরি করে অক্লান্ত পরিশ্রম করানো হচ্ছে।’’
রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য ফের কটাক্ষ করেছেন, বাম সমর্থকদের একাংশ লক্ষ্মীর ভান্ডার-সহ নানা প্রকল্পের কল্যাণে শাসক দলকে ভোট দেবেন আর বাকিরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-বিরোধিতা থেকে বিজেপিকে ভোট দেবেন। তাই নিজেদের ভোট সামলানোই সিপিএমের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত! অন্য দিকে, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দাবি, বামেরা এখন তৃণমূলের সঙ্গে জোটে আছে! তাই রাজ্য প্রশাসন ব্রিগেড সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে। তৃণমূল লোকও দেবে সিপিএমকে! ডিওয়াইএফআই রাজ্য নেতৃত্ব পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন, কয়েক দিন আগে গীতা পাঠের যে ব্রিগেডে রাজ্য সভাপতি-সহ বিজেপির নেতারা গিয়েছিলেন, তার অনুমতি রাজ্য প্রশাসন কেন দিয়েছিল! সেটা কি বিজেপি-তৃণমূল সমঝোতার কারণে? তাঁদের দাবি, দীর্ঘ টালবাহানার পরে ৭ তারিখের ব্রিগেডের অনুমতি দিতে সেনা কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ ‘বাধ্য’ হয়েছে।