পুজোর কেনাকাটার ভিড়ে মানা হচ্ছে না কোভিড বিধি। ফাইল চিত্র।
রাস্তায় পুজোর ভিড়ে গা ভাসালে বা চার-পাঁচ দিনের ছুটিতে ঘুরতে বেরিয়ে পড়লে করোনার বিপদকেই যে ডেকে ঘরে তোলা হবে, সেই বিষয়ে বার বার সতর্ক করে দিচ্ছেন চিকিৎসক ও সংক্রমণ বিশেষজ্ঞেরা। তাঁরা বলছেন, প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ় নিলেই যে সেটা রক্ষাকবচের কাজ করবে, এমনটা মোটেই নয়। তৃতীয় ঢেউয়ের চোখরাঙানির সামনে কোনও রকম বেপরোয়া মনোভাব না-দেখানোই সচেতন নাগরিকের কর্তব্য।
এক চিকিৎসক বলেন, “এখন বঙ্গের ময়দানে প্রায় প্রতিদিনই সাতশোর ঘরে লাফালাফি করছে সংক্রমণ। পুজোয় বেলাগাম উচ্ছ্বাস সেটা এক ধাক্কায় কয়েক গুণ বাড়িয়ে আবার অন্ধকার ঘনিয়ে আনবে না তো!” রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের বৃহস্পতিবারের বুলেটিন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭৭১ জন। সংক্রমিতের সংখ্যা ১০০-র বেশি কলকাতা (১৫৫) আর উত্তর ২৪ পরগনায় (১৪৩)। আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ এবং তার বেশি হাওড়া (৫০), নদিয়া (৫৩), দক্ষিণ ২৪ পরগনা (৫৯), হুগলিতে (৬১)। ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। তাঁদের মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা পাঁচ জন। রাজ্যে সামগ্রিক কোভিড পরিস্থিতি যাচাই করতে এবং মহোৎসবে যাতে কোভিড বিধি সর্বত্র মেনে চলা হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য এ দিন সব জেলাশাসক ও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব।
জোড়া টিকা বর্ম কি না, সেই প্রশ্নে আইসিএমআরের এপিডেমিয়োলজি অ্যান্ড কমিউনিকেবল ডিজ়িজ়ের বিভাগীয় প্রধান চিকিৎসক সমীরণ পাণ্ডা জানান, যিনি টিকার দু’টি ডোজ় নিয়েছেন, তিনি করোনায় আক্রান্ত হবেন না, এমনটা নয়। তিনি হয়তো সঙ্কটজনক হবেন না। সংক্রমিত হলে তাঁর সংক্রমণ ছড়ানোর মাত্রা কোনও অংশে কম হবে না। আর তাতেই যিনি এখনও টিকার দু’টি ডোজ় পাননি বা একটি ডোজ়ও নেননি, তিনি আক্রান্ত হতে পারেন। সমীরণবাবু বলেন, “টিকার প্রথম ডোজ়ের ২১ দিন পরে এবং দ্বিতীয় ডোজ়ের ১৪ দিন পরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। সেই সময়টাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। মাস্ক পরলে তৎক্ষণাৎ অন্যের ‘ড্রপলেট’ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। বেড়াতে গিয়ে সেখানকার জনঘনত্ব বাড়িয়ে সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেওয়া ঠিক নয়। কারণ ভাইরাস সর্বত্র একই কাজ করে।”