এ দৃশ্য আর সামনে থেকে দেখা যাবে না এ বছর। —ফাইল চিত্র।
১৯ বছর পরে আবার বেলুড় মঠের মূল মন্দিরের ভিতরেই আয়োজন হচ্ছে দুর্গা পুজোর। তবে ১১৯ বছরের এই পুজোয় পুষ্পাঞ্জলি দিতে বা দর্শন করতে এ বছর ভক্ত ও দর্শনার্থীরা মঠ চত্বরে প্রবেশ করতে পারবেন না। সরাসরি পুজো দেখা যাবে মঠের নিজস্ব ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল ও সোশ্যাল মিডিয়ায়। অতিমারির পরিস্থিতিতে পুজোর প্রস্তুতি নিয়ে মঙ্গলবার হাওড়া সিটি পুলিশের কর্তাদের সঙ্গে মঠ কর্তৃপক্ষের বৈঠকে এই বিষয়গুলি আলোচনা হয়েছে।
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের তরফে স্বামী জ্ঞানব্রতানন্দ বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে এ বছর ছোট আকারে পুজো হচ্ছে। কুমারী পুজোও হবে। তবে সবই হবে দূরত্ব-বিধি মেনে। এই প্রস্তুতির বিষয়টিই পুলিশের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।’’
১৯০১ সালে বেলুড় মঠে প্রথম দুর্গাপুজো শুরু করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। পুরনো ঠাকুর ঘর ও স্বামীজির ঘরের মাঝের অংশে হোগলা পাতার ছাউনির মণ্ডপ তৈরি করে পুজো হয়েছিল সে বছর। ১৯৪১ সাল থেকে শ্রীরামকৃষ্ণ মন্দিরের (মূল মন্দির) ভিতরে পুজোর আয়োজন হতে থাকে। সেই ধারাবাহিকতা বজায় ছিল ২০০০ সাল পর্যন্ত।
মঠ সূত্রের খবর, দুর্গাপুজোর চার দিন বিশেষত কুমারী পুজো দেখতে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের ভিড় প্রতি বছর ক্রমশ বাড়তে থাকে। ফলে মূল মন্দিরের ভিতরে জায়গার অভাব হওয়ায়, সংলগ্ন মাঠে মণ্ডপ বেঁধে ভিতরে অস্থায়ী কংক্রিটের বেদি
বানিয়ে সেখানেই পুজো শুরু হয় ২০০১ সাল থেকে। করোনার আবহে এ বছর ফের মূল মন্দিরে পুজোর আয়োজন হচ্ছে। কুমারী পুজোরও আয়োজন হবে মূল মন্দিরের পশ্চিমের বারান্দায়। এ বছর কুমারীর পরিবারের সদস্যদেরই তাঁকে পুজোর বেদিতে নিয়ে আসতে হবে।
বৈঠকে আলোচনা হয়েছে, যে হেতু কোনও ভক্ত কিংবা দর্শনার্থী প্রবেশ করতে পারবেন না তাই মঠের ভিতরে থাকবেন না কোনও স্বেচ্ছাসেবক। দূরত্ব-বিধি মেনে সন্ন্যাসী ও ব্রহ্মচারীরা মিলেই পুজোর আয়োজন করবেন। এ বছর বন্ধ প্রসাদ বিতরণও। প্রাথমিক ভাবে
ঠিক হয়েছিল মঠের মূল গেটের বাইরে বড় পর্দায় পুজোর ছবি সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। অত্যধিক ভক্ত সমাগমের আশঙ্কা করে এ দিন পুলিশের সঙ্গে আলোচনায় বাতিল করা হয়েছে সেই পরিকল্পনাও। মঠ সূত্রের খবর, সোশ্যাল মিডিয়া ও ইউটিউবে ‘belurmath.tv’ –তে দুর্গাপুজো সরাসরি দেখা যাবে। মঠের মূল গেটের বাঁ দিকে একটি ক্যাম্প বানানো হয়েছে। সেখানে পুজোর সামগ্রী দিয়ে যেতে পারবেন ভক্ত ও দর্শনার্থীরা। আনলক পর্বের
শুরুতে সাধারণের জন্য বেলুড় মঠ খুলে দেওয়া হয়েছিল। নতুন করে মহামারির পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ২ অগস্ট থেকে মঠ ফের বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মঠ কর্তৃপক্ষ জানান, পুনরায় নির্দেশিকা জারি না হওয়া পর্যন্ত ভক্ত ও দর্শনার্থীদের মঠে প্রবেশ বন্ধ থাকবে।