গ্রেফতার রুইয়া

এ বার হেস্তনেস্ত চান ডানলপ কর্মীরা

দেওয়ালে তাঁদের পিঠ থেকে গিয়েছে অনেক দিন আগেই। কর্তৃপক্ষের কাছে বহু আবেদনেও মেলেনি বকেয়া। কারখানা খোলা রয়েছে নামেই। উৎপাদন বন্ধ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সাহাগঞ্জ শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:৩৮
Share:

শনিবার ডানলপ কারখানার ছবি তুলেছেন তাপস ঘোষ।

দেওয়ালে তাঁদের পিঠ থেকে গিয়েছে অনেক দিন আগেই। কর্তৃপক্ষের কাছে বহু আবেদনেও মেলেনি বকেয়া। কারখানা খোলা রয়েছে নামেই। উৎপাদন বন্ধ। এই অবস্থায় পবন রুইয়া গ্রেফতারে এ বার হেস্তনেস্ত চাইছেন হুগলির সাহাগঞ্জের ডানলপ কারখানার বর্তমান এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা। যে কারখানাটির কর্ণধার ওই শিল্পপতিই।

Advertisement

জেসপ নিয়ে রেলের প্রতারণা মামলায় শনিবার দিল্লি থেকে সিআইডি গ্রেফতার করেছে রুইয়াকে। ডানলপ কারখানার শ্রমিকেরাও পৃথক তদন্ত চাইছেন। রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশের কাছে সেই আবেদন নিয়ে দরবারের জন্য এ দিন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিলেন তাঁরা।

কারখানার ‘কনভেয়ার বেল্ট’ বিভাগের প্রাক্তন কর্মী অসীম বসু বলেন, ‘‘ছ’বছর আগে অবসর নিয়েছি। আজ পর্যন্ত বকেয়া পাইনি। কারখানার সব কিছু চুরি হয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই সিআইডি পুরো ঘটনার তদন্ত করুক। এই বয়সে আমাকে মহারাষ্ট্রে ছোট সংস্থায় কাজ নিয়ে যেতে হয়েছে।’’ কার্তিক স্বর্ণকার নামে আর এক প্রাক্তন কর্মী এখন দিনমজুরি করেন। তিনি বলেন, ‘‘একটা টাকাও অবসরের পর পাইনি। এর একটা বিহিত হওয়া দরকার। তদন্ত হোক।’’

Advertisement

ডানলপের শ্রমিকদের বকেয়া মেটানোর দাবি নিয়ে ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে চন্দননগরের ‘আইনি সহায়তা কেন্দ্র’। সংগঠনের পক্ষে বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা পুরো কাগজপত্র সিআইডি-র হাতে তুলে দেব। শ্রমিকদের পিএফ কেটে নিয়ে সেই টাকা ফেরত দেননি কর্তৃপক্ষ। বিশ্বাসভঙ্গের মামলা হওয়া উচিত।’’ আইএনটিটিইউসি-ও চায়, রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশ পুরো ঘটনার তদন্ত করুক। সংগঠনের জেলা সভাপতি বিদ্যুৎ রাউত বলেন, ‘‘ভবিষ্যৎ পন্থা নিয়ে রবিবার আমরা শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করব। আমরাও চাই রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশ পুরো ঘটনার তদন্ত করুক। শ্রমিকদের মত নিয়ে পুরো বিষয় চূড়ান্ত করব।’’

এক সময় ডানলপের টায়ারের রমরমা বাজার ছিল। কিন্তু দেশের অন্যতম পুরনো এই টায়ার প্রস্তুতকারক সংস্থার ঝাঁপ বন্ধ হয়েছে বারেবারে। বারবার মালিকানাও বদলেছে। তবু কারখানার হাল ফেরেনি। ২০১৫ সালে শেষবারের জন্য কারখানার দরজা খুললেও উৎপাদন হয়নি একদিনও। বর্তমানে সেখানে কর্মী রয়েছেন ৪১১ জন। অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর সংখ্যা ৪৪৩৫ জন।

ওই অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের অভিযোগ, পিএফের (প্রভিডেন্ড ফান্ড) টাকা বিধিবদ্ধ ভাবে কারখানা কর্তৃপক্ষ কেটে নিলেও অবসরের পরে তাঁদের শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে। কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার আবেদনেও ফল হয়নি। সব মিলিয়ে তাঁদের পিএফের ১২৮ কোটি-সহ অন্তত ৬০০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় পুলিশের কাছে অভিযোগও দায়ের হয়েছে। শুধু তাই নয়, শ্রমিকদের বকেয়া না দেওয়ায় পিএফ কমিশনারের দফতর থেকে পবন রুইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের হয়েছে। সেই মামলার এখনও নিষ্পত্তি হয়নি।

তাই এ বার রুইয়ার গ্রেফতারে হেস্তনেস্ত চাইছেন ডানলপের কর্মীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement