শহরকেন্দ্রিক বেশ কিছু স্কুলে বদলি হওয়ার জন্য আবেদনের সংখ্যা খুব বেশি। সেই জন্য কিছু স্কুলে শূন্য পদের সমস্যা থাকতে পারে, মত স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান শুভশঙ্কর সরকারের। ফাইল চিত্র।
স্কুলশিক্ষকদের বদলি-সমস্যার সুরাহা করতে চালু হয়েছিল উৎসশ্রী পোর্টাল। বাড়ির কাছাকাছি বদলির জন্য সেই পোর্টালের মাধ্যমে আবেদন করে নতুন স্কুলে যোগ দেওয়ার জন্য অনেকে নিয়োগপত্র পেয়েও গিয়েছিলেন। কিন্তু নতুন স্কুলে যোগ দিতে গিয়ে দেখেন, সেখানে কোনও পদ খালি নেই। ফলে নিয়োগপত্র পেয়েও নতুন স্কুলে যোগ দিতে পারেননি অনেকে।
এই ধরনের বদলিতে ইচ্ছুক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ফের বদলির আবেদন করতে বলেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। কিন্তু শিক্ষকদের একাংশের প্রশ্ন, নতুন আবেদন করলে তাঁরা কি পছন্দমতো নিজের জেলা বা মহকুমায় স্কুল পাবেন? যদি না-পান, তা হলে নতুন করে বদলির আবেদন করে লাভ কী?
পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের বাসিন্দা এক শিক্ষক জানান, তিনি তমলুক মহকুমারই একটি স্কুলে বদলির জন্য আবেদন করেছিলেন। যখন আবেদন পাঠান, তখন ওই মহকুমার বেশ কয়েকটি স্কুলে তাঁর বিষয়ে পদ শূ্ন্য ছিল। কিন্তু নিয়োগপত্র পেয়ে নতুন স্কুলে যোগ দিতে গিয়ে তিনি দেখেন, সেখানকার শূন্য পদে নিয়োগ হয়ে গিয়েছে। আর পদ খালি নেই। ওই শিক্ষক বলেন, “আমাকে ফের আবেদন করতে বলা হয়েছে। কিন্তু আমি কি আর পছন্দের স্কুলগুলির একটাও পাব? কারণ দেখতে পাচ্ছি, তমলুক মহকুমার প্রায় সব স্কুলেই আমার বিষয়ের শূন্য পদ পূরণ হয়ে গিয়েছে। বাড়ি থেকে দূরের স্কুলে বদলি হয়ে আমার কী লাভ?”
শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, পদ শূন্য আছে দেখেই তাঁরা আবেদন করছেন। কিন্তু নিয়োগপত্র পেয়ে স্কুলে গিয়ে দেখছেন, তখন পদ আর খালি নেই। বদলিতে ইচ্ছুক ওই শিক্ষকদের প্রশ্ন, স্কুল-কর্তৃপক্ষ ঠিক সময়ে শূন্য পদের তথ্য ‘আপডেট’ বা হালতামামি করছেন না কেন? ঠিক সময়ে শূন্য পদের তথ্য দেওয়া হলে বিভ্রান্তি তৈরি হয় না। সমস্যায় পড়তে হয় না বদলি হতে ইচ্ছুক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের।
ডায়মন্ড হারবারের ভূগোলের এক শিক্ষিকা জানান, তাঁর বাড়ি কলকাতায়। তিনি মহানগরের একটি স্কুলে বদলির জন্য আবেদন করেছিলেন। যখন আবেদন করেন তখন সেই স্কুলে পদ শূন্য ছিল। কিন্তু এখন জানতে পেরেছেন, পদ আর খালি নেই। ওই শিক্ষিকা বলেন, “এসএসসি থেকে আমার আগের আবেদন ফেরত আসেনি। তাই নতুন করে আবেদনও করতে পারছি না। খুবই আতান্তরে পড়েছি। উৎসশ্রী পোর্টালের মাধ্যমে বদলি নিয়ে বাড়ির কাছের স্কুলে যোগ দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেই সম্ভাবনা ক্রমশই পিছিয়ে যাচ্ছে।”
এমনটা হচ্ছে কেন? স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান শুভশঙ্কর সরকার বলেন, “আসলে অনেকেই গ্রাম থেকে শহরের স্কুলে বদলি হতে চাইছেন। তাই শহরকেন্দ্রিক বেশ কিছু স্কুলে বদলি হওয়ার জন্য আবেদনের সংখ্যা খুব বেশি। সেই জন্য কিছু স্কুলে শূন্য পদের সমস্যা থাকতে পারে। তবে যে-প্রার্থী নতুন আবেদন করবেন, তিনি তাঁর প্রথম পছন্দের স্কুল যদি না-ও পান, তাঁকে দ্বিতীয় পছন্দের স্কুল দেওয়ার বিষয়টি অবশ্যই দেখা হবে।”