মেঘাচ্ছন্ন :কুয়াশামাখা দিগন্ত।
কাল থেকেই মেঘলা আকাশ, সন্ধ্যায় টিপটিপ বৃষ্টি। রবিবেলায় শহরে এমন আবহাওয়ার সৌজন্যে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘পেতাই’। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, আজ, সোমবার ও আগামী কাল, মঙ্গলবার কলকাতা ও আশপাশের এলাকায় বৃষ্টি পূর্বাভাস রয়েছে। বৃষ্টি এবং মেঘলা আকাশের জন্য দিনের তাপমাত্রাও কম থাকবে।
বস্তুত, রবিবারই দিনের তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে স্বাভাবিকের নীচে। এ দিন আলিপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৪.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম। তবে মাথাচা়ড়া দিয়েছে রাতের তাপমাত্রা— সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯.৪ ডিগ্রি, স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। দিনভর শীতের আমেজ থাকলেও এই পরিস্থিতি আসলে শীতের স্বাভাবিক ছন্দের বিপরীত বলেই জানাচ্ছেন আবহবিদদের একাংশ। তাঁদের মতে, দিনের বেলা কড়া রোদ এবং রাতে কড়া ঠান্ডাই মহানগরে শীতের আসল চরিত্র।
মৌসম ভবন বলছে, ঘূর্ণিঝড় ‘পেতাই’ (তাইল্যান্ডের দেওয়া নাম) রয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে এবং তার অভিমুখ অন্ধ্র উপকূলের দিকে। তা সত্ত্বেও তার প্রভাব এখানে পড়ছে কী ভাবে? আবহবিদদের ব্যাখ্যা, ঘূর্ণিঝ়়ড়ের প্রভাবে বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তরে হাওয়ার গতি বেশি রয়েছে। তাই বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তরের মেঘ পূর্ব ভারতের উপকূলীয় এলাকায় ঢুকছে। আজ, সোমবার ‘পেতাই’ উপকূলের আরও কাছে এলে শহরের আকাশে আরও মেঘ ঢোকার সম্ভাবনা।
আরও পড়ুন: আন্দামান ছেড়ে ঝড় অন্ধ্রমুখী, হতে পারে বৃষ্টি
তবে এ দিনের আবহাওয়া দেদার উপভোগ করেছেন শহরবাসী। বিকেল গড়াতেই চায়ের আড্ডায়-পানাহারে মজেছেন অনেকে। কেউ আবার ঢুঁ মেরেছেন ভরদুপুরে ময়দান-চিড়িয়াখানা-ভিক্টোরিয়ায়। আলিপুর চিড়িয়াখানায় ভিড় দেখে খুশি অধিকর্তা আশিসকুমার সামন্ত বলছেন, ‘‘রবিবার ৪৩ হাজার দর্শক এসেছিলেন। গত বছর এই দিনে মাত্র ১৮ হাজার লোক এসেছিলেন।’’ সূত্রের খবর, চি়ড়িয়াখানার অন্দরে সিংহ, জাগুয়ার দেখতে ভিড় জমছে। লোক থিকথিক করেছে শিম্পাঞ্জির খাঁচার সামনেও। ভিড়ের মধ্যে কেউ যাতে পশুপাখিদের উত্ত্যক্ত না করে, তা দেখতে চলছে নজরদারি।
তবে ‘পেতাই’য়ের প্রভাব কাটলেই জাঁকিয়ে শীত পড়ার পূর্বাভাস দিচ্ছে হাওয়া অফিস। গণেশবাবু জানিয়েছেন, সেক্ষেত্রে তাপমাত্রা এক ধাক্কায় ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নামতে পারে। আগামী বুধবার থেকেই রাতের পারদ পতনের সম্ভাবনা জোরালো হচ্ছে।
শীতের সেই ইনিংস বড়দিন পর্যন্ত চলে কি না, সেটাই দেখার!