প্রকাশ্যে সরকারের সমালোচনা করা যাবে না। তৃণমূল সমর্থক কর্মচারী ফেডারেশনকে এই নির্দেশ দিলেন দলের মহাসচিব তথা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পাশাপাশি ফেডারেশনের নেতা সঞ্জীব পালকে কর্মচারী সংগঠনের কোর কমিটি থেকে অপসারণ করা হল। সরকারের সমালোচনা করায় আগেই তাঁকে বদলি করা হয়েছিল।
কর্মচারী আন্দোলনে সরকারের সমালোচনা নিয়ে আরও কঠোর মনোভাব নিল শাসক শিবির। গত ১ ডিসেম্বর নবান্নে সরকারের সমালোচনা করে শাস্তির মুখে পড়েছিলেন নবান্নের কর্মী সঞ্জীববাবু। বিষয়টিকে প্রশাসনিক বলে উল্লেখ করা হলেও ওই বিক্ষোভ ও বক্তৃতার জন্যই তাঁকে পরিবহন দফতরে বদলি করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে বিষয়টি সম্পর্কে দলও যে কড়া মনোভাব নিচ্ছে এদিনের বৈঠকে তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন পার্থবাবু। এদিন ফেডারেশনের কোর কমিটির বৈঠকে তিন আহ্বায়ক দিব্যেন্দু রায়, সৌম্য বসু ও তপন গড়াইয়ের উদ্দেশে তাঁর নির্দেশ, প্রকাশ্যে সরকারের সমালোচনা করবেন না। কোথাও কিছু বলা থাকলে আলোচনায় বসুন। এই কোর কমিটির সদস্য ছিলেন সঞ্জীববাবু। প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলা যেতে পারে।
১৭ সদস্যের কোর কমিটি থেকে সঞ্জীববাবুকে বহিস্কারের ফলে এখন সদস্য সংখ্যা হল ১৬। পার্থবাবুর সঙ্গে বৈঠকে সঞ্জীববাবু উপস্থিত ছিলেন না।
বৈঠকের পরে পার্থবাবু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের কর্মী হয়ে নিজের পদ ব্যবহার করে যে ভাষায় সঞ্জীববাবু কথা বলেছেন, যে ভাবে অন্যদের প্ররোচিত করেছেন, তা কোনও ভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। ওঁকে কোর কমিটিতে রাখা যাবে না জানিয়ে দিয়েছি।’’
ফেডারেশনকে পার্থবাবুর পরামর্শ, ‘‘কোনও রকম নিয়ম না ভেঙে কর্মীদের পাশে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ফেডারেশনকে। ঐক্যবদ্ধভাবে নিয়মিত বৈঠক করে কর্মীদের অভাব-অভিযোগ যথাস্থানে জানাতে বলা হয়েছে। বিরোধী দলের কর্মীদের মতো ফেডারেশন যাতে আর কোনও রকম আচরণ না করে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।’’ লোকসভা ভোট মিটলে ফেডারেশনকে রাজ্য সম্মেলন করতে পরামর্শ দিয়েছেন পার্থবাবু।
মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের কর্মী হিসাবে নবান্নে ছিলেন সঞ্জীবববাবু। সেখানে কর্মচারী সংগঠনের একটি শাখার মাথায়ও ছিলেন তিনি। এদিন কোর কমিটির বৈঠকে পার্থবাবু জানিয়ে দেন, ওই শাখা দলের স্বীকৃত নয়। সরকারের সমালোচনা করায় বদলি হয়েছে ফেডারেশনের কোর কমিটির আর এক সদস্য বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যকেও। এদিন বৈঠকে উপস্থিত হয়ে তিনি অবশ্য ভুল স্বীকার করে নিয়েছেন।