অসচেতন: কোভিড বিধি শিকেয় তুলে মানুষের ঢল গঙ্গাসাগরে। নিজস্ব চিত্র।
মকর সংক্রান্তিতে গঙ্গাসাগর মেলায় ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখতে বহু চেষ্টা চালিয়েছে প্রশাসন। আদালতেরও নজরদারি ছিল। কোভিড পরিস্থিতি আপাতত কিছুটা নিয়ন্ত্রণে হলেও এখনও সতর্কতা জরুরি বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। তবে মাঘী পূর্ণিমা উপলক্ষে যেমন লাগামছাড়া ভিড় দেখা গেল গঙ্গাসাগরে, তাতে সে সব সতর্কতা বার্তা কার্যত চুলোয় গিয়েছে বলে মনে করছেন সচেতন নাগরিকেরা। প্রশাসনের নজরদারিও খুবই ঢিলেঢালা ছিল বলে অভিযোগ। গঙ্গাসাগর উপকূল থানার হাতে গোনা কয়েকজন পুলিশকর্মী ও গঙ্গাসাগর পঞ্চায়েতের কয়েকজন কর্মী ছিলেন ভিড় সামলাতে। ফলে দূরত্ববিধি শিকেয় ওঠে। অনেকেরই মাস্ক ছিল না।
মঙ্গলবার রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে পুণ্যার্থীরা এসেছিলেন গঙ্গাসাগরে। কপিলমুনির মন্দিরে ভিড় উপচে পড়েছে। বুধবার ভোর থেকে সাগরে স্নান সেরেছেন হাজার হাজার মানুষ। মাস্ক কার্যত চোখেই পড়েনি।
প্রশাসন সূত্রের খবর, ভিড় সামলাতে ভেসেল ও বাসের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে পুণ্যার্থীদের থাকার জন্য কিছু ছাউনি তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, তা সংখ্যায় এতই কম, সোমবার রাতে বহু মানুষ খোলা আকাশের নীচে শুয়ে কাটিয়েছেন।
সাগরের বিডিও সুদীপ্ত মণ্ডল জানান, এ বছর প্রচুর মানুষের ভিড় হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব রকমের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মাস্ক পরার জন্য বার বার বলা হচ্ছে সকলকে। ৬০ শতাংশ মানুষ মাস্ক পরেছেন বলে দাবি বিডিওর।
স্থানীয় বাসিন্দা দেবপ্রসাদ খাঁড়া জানান, মাঘী পূর্ণিমায় লক্ষাধিক পুণ্যার্থীর ভিড় হয়েছে। কিন্তু মানা হয়নি কোভিডবিধি। আগামী দিনে সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে তাঁর মতো অনেকেরই আশঙ্কা।
মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট রঞ্জন গিরি বলেন, ‘‘মাঘী পূর্ণিমায় কোভিড বিধি না মেনে স্নান হলে আগামী দিনে কোভিড সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা থাকছেই।’’
এ বিষয়ে বিজেপির মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি প্রদ্যুৎ বৈদ্য জানান, গঙ্গাসাগর মেলার মতোই সরকারি ব্যবস্থা থাকা জরুরি ছিল। কিন্তু তা দেখা যায়নি।
তবে গঙ্গাসাগর মেলার পরে এলাকায় সংক্রমণ বেড়েছে, এমন তথ্য নেই। সে তথ্যটুকুই খানিকটা ভরসা জোগাচ্ছে স্থানীয় মানুষজনকে।