সিপিএমের যুব সংগঠনের মুখপত্রের উৎসব সংখ্যা প্রকাশের অনুষ্ঠান। —নিজস্ব চিত্র।
পুজোর মরসুমে ধর্মতলায় অনশনে বসেছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। কর্মবিরতি বা অনশনের মতো কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে বিকল্প পথ ভেবে দেখার জন্য তাঁদের প্রতি আবেদন এ বার উঠে এল সিপিএমের মঞ্চ থেকে। যাদবপুর ৮বি মোড়ে সোমবার সন্ধ্যায় সূচনা হয়েছে সিপিএমের আয়োজিত পুজোর বইয়ের বিপণির। সেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেই সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি ও প্রতিবাদ সঙ্গত। ন্যায়-বিচার এবং দুর্নীতিমুক্ত স্বাস্থ্য-ব্যবস্থা অবশ্যই চাই। কিন্তু সতর্ক থাকতে হবে, শাসক দল তাঁদের কানা গলিতে ঢুকিয়ে দেবে। তাই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার বিকল্প পথ ভাবুন। পথ খুঁজে পেতে আপনারাই উপযুক্ত।’’ কর্মবিরতি বা অনশন কর্মসূচি ছেড়ে বিকল্প পথে আন্দোলনের দিকেই ইঙ্গিত ছিল সিপিএম নেতার।
যাদবপুরের অনুষ্ঠানে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু আক্ষেপ করেছেন বাংলার ‘শিক্ষা-সংস্কৃতি ধ্বংস’ হওয়ায়। সেই সঙ্গেই তাঁর বক্তব্য, ‘‘মহিলা চিকিৎসক কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায় বাংলার গর্ব। সেই বাংলায় এক চিকিৎসক-ছাত্রীর সঙ্গে এমন ঘটনা সারা দেশের সামনে আমাদের লজ্জিত করেছে।’’ উৎসবে না-থেকেও সিপিএম কেন পুজো-মণ্ডপের চত্বরে বইয়ের স্টল খুলবে, সেই প্রশ্ন তুলে সমাজমাধ্যমে সরব শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। যাদবপুরে বইয়ের স্টল উদ্বোধনেই সিপিএমের তরফে সুজন পাল্টা বলেছেন, ‘‘বইয়ের মর্ম ওরা বুঝবে না। তাই ওরা লাইব্রেরি পোড়াতে পারে! বাংলায় যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে শোক এবং প্রতিবাদ আছে বলেই বইয়ের স্টল হয়েছে কালো কাপড়ে মোড়া। চেতনাকে উৎসারিত করার আয়োজনে আমরা নিশ্চয়ই আছি।’’ অনুষ্ঠানে ছিলেন অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী, সিপিএমের কলকাতা জেলা সম্পাদক কল্লোল মজুমদার প্রমুখ। পরে এসেছিলেন দলের যুব নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ও।
সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের মুখপত্রের উৎসব সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে এ দিনই। এই অনুষ্ঠান শনিবার নির্ধারিত থাকলেও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বালিকার ‘ধর্ষণ ও খুনে’র ঘটনার জেরে তা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। দীনেশ মজুমদার ভবনে এ দিন উৎসব সংখ্যা প্রকাশে ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী, রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা, মুখপত্রের সম্পাদক কলতান দাশগুপ্তদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী। আর জি কর-সহ নানা ঘটনায় ন্যায়-বিচারের দাবিতে আন্দোলন শক্তিশালী করার ডাক দেওয়া হয়েছে অনুষ্ঠানে। মীনাক্ষী এ দিন মন্তব্য করেছেন, ‘‘আণরা শুধু এটুকুই বলতে চাই, রাজ্যে প্রায় প্রতিদিন মেয়েরা ধর্ষিতা হয়ে, খুন হয়ে লাশকাটা ঘরে যাচ্ছে। এর দায় কি যাঁরা ডান্ডিয়া নাচছেন, ফিতে কাটছেন, উৎসবে ফেরার নিদান দিচ্ছেন বা পুলিশকে ক্লিন চিট দিচ্ছেন, তাঁদের নিতে হবে না? তাতে যদি নাম মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হয়, দায় তাঁকেও নিতে হবে।’’