—প্রতীকী ছবি।
দিনপিছু বেতন পাওয়ার কথা ২৩০-৪০০ টাকা। কেউ পাচ্ছেন ৭০০ টাকা। কেউ ৫০০ টাকা। কেউ বা ৬০০ টাকা।
মৎস্য দফতরের অধীনে থাকা রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগমের প্রায় আটশো কর্মী দৈনিক মজুরি ভিত্তিক বেতন পান। নিয়ম মতো মাধ্যমিক অনুত্তীর্ণ কর্মীদের পাওয়ার কথা দিনপিছু ২৩০ টাকা। মাধ্যমিক উত্তীর্ণ ও উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণদের পাওয়ার কথা যথাক্রমে ৩৩০ ও ৪০০ টাকা। অভিযোগ, নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের প্রায় ৫০ জন কর্মী দৈনিক চারশো টাকার বেশি বেতন পাচ্ছেন। রাজ্য মৎস্য দফতরের সচিব রোশনি সেন রবিবার বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখছি।’’
মৎস্য উন্নয়ন নিগমের পরিচালনায় রাজ্যে ১৭টি প্রকল্প রয়েছে। যেখানে মাছ চাষের পাশাপাশি অতিথিশালাও রয়েছে। এই সমস্ত প্রকল্পের সংখ্যাগরিষ্ঠ কর্মী দৈনিক মজুরি ভিত্তিক বেতন পান। বেশির ভাগ প্রকল্পের কর্মীদের ছ’মাস থেকে এক বছর বেতন বাকি রয়েছে। একদিকে অধিকাংশ কর্মীরা দীর্ঘদিন বেতন না পেয়ে হতাশায় ভুগছেন। আবার কর্মীদের একাংশের সঙ্গে তাঁদের এই বেতন বৈষম্য নিয়েও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ।
নিগম সূত্রের খবর, মৎস্য দফতরের প্রাক্তন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ এবং নিগমের পূর্বতন ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের আমলে বেশ কিছু কর্মীর বেতন ‘রাতারাতি’ বাড়ানো হয়েছিল। বীরভূমে কর্মরত এক কর্মীর যেখানে পাওয়ার কথা ৪০০ টাকা, তিনি ৭০০ টাকা করে পেয়ে আসছেন। এ প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট ওই কর্মীর সাফাই, ‘‘তদানীন্তন ম্যানেজিং ডিরেক্টর আমার বেতন বাড়িয়েছেন। আমি কিছু জানি না।’’
চন্দ্রনাথ ও সুব্রতকে একাধিক বার ফোন ও মেসেজ করা হলেও উত্তর মেলেনি। অভিযোগ, বীরভূমে সেনেরবাঁধে কর্মরত এক মহিলা মাধ্যমিক অনুত্তীর্ণ হলেও তিনি রোজ ৫০০ টাকা পাচ্ছেন। ক্ষুব্ধ অন্যান্য কর্মীদের অভিযোগ, ‘‘দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মীদের বেতন বৈষম্য কেন থাকবে? এক শ্রেণির কর্মী নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছেন। আর একাংশ ফাঁকি মেরে পার পেয়ে যাচ্ছেন। এর এ বার বিহিত চাই।’’
দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মীদের বেতন কাঠামো কত হবে তা বহু পূর্বে নিগম বিজ্ঞপ্তি আকারে বের করেছিল। অভিযোগ, সেই বিজ্ঞপ্তিকে মান্যতাই দেওয়া হচ্ছে না। নিগমের এক আধিকারিকের অভিযোগ, ‘‘নিগমের পরতে পরতে দুর্নীতি ছেয়ে গিয়েছে। অবিলম্বে বেতন বৈষম্য দূর না করলে কাজে স্বচ্ছতা আসবে না। বিষয়টিতে ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের গুরুত্ব দেওয়া উচিত।’’