রাখি-বন্ধন। রবিবার, ধর্মতলায়। — সুদীপ্ত ভৌমিক
প্রতিবন্ধীরাও মানুষ। তাঁদের মানবিক চোখে দেখা হোক। বাসচালক-কন্ডাক্টরদের মধ্যে এই বার্তা দিতে রবিবার প্রতিবন্ধী পড়ুয়ারাই তাঁদের হাতে পরালেন বন্ধুত্বের রাখি’।
গত বছর এই দিনেই তারাতলার কাছে এক প্রতিবন্ধী যুবককে বাস থেকে ঠেলে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে কন্ডাক্টরের বিরুদ্ধে। চালক-কন্ডাক্টরদের মধ্যে সচেতনতা ছড়াতে তাই এ দিনটিই বেছে নিয়েছিল ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সেরিব্রাল পল্সি ও বাসমালিক সংগঠন জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেট্স। তাদের উদ্যোগেই এ দিন ধর্মতলায় বাসচালক ও কন্ডাক্টরদের হাতে রাখি পরান সেরিব্রাল পল্সি আক্রান্তদের ওই সংগঠনের একঝাঁক পড়ুয়া।
সংস্থার শিক্ষক জিজা ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা চাই, সমাজে প্রতিবন্ধীদের মানবিক চোখে দেখা হোক। বাস, ট্রেন, উড়ানে ওঠার সময়ে প্রতিবন্ধীরা যাতে কোনও ভাবেই হেনস্থার শিকার না হন, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নজর দিতে হবে।’’ প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে কলকাতা বিমানবন্দরে একটি বেসরকারি বিমানে ওঠার সময়ে অ্যাটেন্ড্যান্ট না থাকায় নামিয়ে দেওয়া হয় সেরিব্রাল পল্সি আক্রান্ত জিজাকে। প্রতিবাদে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পরে মাস দুয়েক আগে জিজাকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালতে। ওই ঘটনার পর ফের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সেরিব্রাল পল্সির আর এক প্রতিবন্ধী কর্মীকে বাস থেকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এর পরেই জিজারা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেন।
জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেট্সের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাস সংস্থার তরফে এই দিনটি মানবিক দিবস হিসেবে পালন করব। সংগঠনের তরফে বিভিন্ন বাসস্টপেও সচেতনতা কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে।’’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ডিসি (ট্রাফিক) ভি সলোমন নেসাকুমার বলেন, ‘‘প্রতিবন্ধীরাও যে মানুষ, বোধটা গাড়িচালক, কন্ডাক্টরদের পাশাপাশি সকলের মধ্যেই তৈরি করতে হবে।’’