দিলীপ বলেন, দিশি ফল তাঁকে টানে। ফাইল চিত্র
দিলীপ ঘোষ চুপ থাকতে পারেন না। ঘনিষ্ঠরা বলেন, খবরের বাইরে থাকতে পারেন না। সব সময়েই প্রচারের আলো পেতে চান। আর খবরে থাকতেই ‘দলবিরোধী’ মন্তব্য করতেও অনেক সময় দ্বিধা করেন না। তার জন্য নেতৃত্বের ধমক খেয়ে একটু চুপ হলেও ‘দস্যি’ শিশুর মতো হাত-পা চলতেই থাকে। রাস্তায় লাঠি ঘুরিয়ে, সাইকেল চালিয়ে কিংবা পার্কে যোগাভ্যাস করে খবরে থাকতে চান। সেই ধারা বজায় রেখেই রবিবার খেজুর পাড়লেন লগা হাতে। সেটা আবার ভিডিয়ো বানিয়ে ফেসবুকে পোস্টও করেছেন।
সাম্প্রতিক কালে এ নিয়ে দ্বিতীয় বার। ধমকে কাজ না হওয়ায় গত মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মুখ বন্ধ রাখতে বলে সতর্ক করেছেন। তার পর থেকে দলবিরোধী হতে পারে এমন কিছু বলতে শোনা না গেলেও নানা রাজনৈতিক বিষয়ে মুখ খুলেছেন ঘোষমহাশয়। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের চিঠি পাওয়ার পরে গত বৃহস্পতিবার গিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদ সফরে। সেখানে গিয়ে নশিপুরে গিয়ে বাগানে লগা হাতে লিচু পাড়েন। সঙ্গে লোকজনও ছিল। সেই সব বিজেপি কর্মীকে লিচু পেড়ে বিলিও করেন দিলীপ। ভিডিয়ো বানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করে লিখেছিলেন, ‘গাছ থেকে টাটকা ফল পেড়ে খাওয়ার আনন্দই আলাদা।’
রবিবার অবশ্য কলকাতাতেই। নিউ টাউনের কোনও খেজুরতলায় সপার্ষদ হাজির হন দিলীপ। সাদা হাফ প্যান্ট আর টি-শার্ট পরে লগা হাতে খেজুর পাড়তে লাগেন। সেই ভিডিয়ো পোস্ট করে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ছোটবেলায় গ্রামের বাড়িতে এই ভাবেই খেজুর পাড়তাম। আধ কাঁচা খেজুরের ছড়ায় নুনজল ছিটিয়ে রাখতাম। অদ্ভুতভাবে পেকে যেত সেগুলো। আজ নিউটাউনে দেশি খেজুরের গাছে খেজুর দেখে পাড়তে ইচ্ছে হল। পুষ্টিগুণে ভরপুর গ্রামবাংলার এই দেশি খেজুরগুলি।’
রাজ্য বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘সবাই বলে সংসারের চাপ, দায়িত্ব ও কর্তব্যের চাহিদা ছেলেমানুষি নষ্ট করে দেয়। হয়তো ঠিক। আর সেটা ঠিক বলেই হয়তো সংসার-না-পাতা দিলীপ ঘোষ একটু বেশি সহজে চলে যেতে পারেন শৈশবে। ছেলেবেলার মতো আঁকশি হাতে বেরিয়ে পড়তে পারেন বাগানের ফল পাড়তে, নিজেদের বাগানে।’’ তিনিই মনে করালেন আর এক দুপুরের কথা। গত বছরের ১৪ নভেম্বর নিজের গ্রাম ঝাড়গ্রাম জেলার কুলিয়ানে গিয়েছিলেন দিলীপ। সঙ্গে ছিলেন অনেকেই। শিশু দিবসে শৈশবের গ্রামে গিয়েও বছর ৫৭-র দিলীপ আঁকশি দিয়ে বাতাবি লেবু পাড়তে লেগে পড়েন।