সৌমিত্র খাঁয়ের ঘোষিত সমস্ত জেলা কমিটি ভেঙে দিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
বিজেপি রাজ্য যুব মোর্চার সভাপতি তথা সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের ঘোষিত সমস্ত জেলা কমিটি ভেঙে দিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। পাশাপাশিই বাতিল করা হয়েছে জেলা সভাপতিদের পদও। শুক্রবার দুপুরে তিনি ওই মর্মে লিখিত নির্দেশ জারি করেছেন। তার পর থেকেই রাজ্য বিজেপি-র অন্দরে জলঘোলা শুরু হয়েছে। সৌমিত্র ওই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তাঁর ফোন বেজে গিয়েছে। তবে এর ফলে দলের অভ্যন্তরে দিলীপ শিবিরের সঙ্গে কৈলাস বৈজয়বর্গীয়-মুকুল রায় শিবিরের দ্বন্দ্ব আরও একবার প্রকাশ্যে এসে পড়েছে।
দিলীপের জারি করা ‘সাংগঠনিক ঘোষণা’-য় বলা হয়েছে, ‘অনিবার্য কারণবশত আজ থেকে পরবর্তী ঘোষণা পর্যন্ত সমস্ত জেলার ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার সভাপতির পদ ও জেলা কমিটি বাতিল করা হল। পরবর্তী ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত সমস্ত জেলার বিজেপি সভাপতিগণ এই দায়িত্ব পালন করবেন’।
প্রসঙ্গত, মোট ৩৮টি কমিটির মধ্যে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩৬টি কমিটিই ঘোষণা করে দিয়েছিলেন সৌমিত্র। বাকি ছিল মাত্রই ২টি জেলা। কিন্তু দিলীপের এ দিনের ঘোষণার ফলে সৌমিত্রের ওই ঘোষণা একেবারেই মূল্যহীন হয়ে পড়ল। বিজেপি সূত্রের খবর, রাজ্যের বিভিন্ন জেলার সভাপতিরা সভাপতি দিলীপের কাছে অভিযোগ করেছেন, তাঁদের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই সৌমিত্র একতরফা ভাবে কমিটি ঘোষণা করে দিয়েছেন। অন্তত ৮টি জেলা থেকে ওই বিষয়ে নির্দিষ্ট অভিযোগ জমা পড়েছিল। তার মধ্যে আবার ৩-৪টি জেলার অভিযোগ ছিল গুরুতর। ক্রমাগত অভিযোগ আসতে থাকায় বিরক্ত রাজ্য সভাপতি সবক’টি কমিটিই ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: ‘ভোলেনাথ শঙ্করা’ গানে নাচ মন্ত্রী সুজিতের, কেদারনাথ থিমে কি বিশেষ কোনও বার্তা
আপাতত ঠিক হয়েছে, পুজোর পর আবার নতুন কমিটি তৈরি করা হবে। তবে তার আগে দলের অন্দরের বিতণ্ডা মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হবে। ওই মনোমালিন্য আলোচনার মাধ্যমে মেটানো সম্ভব বলেও দলের নেতারা মনে করছেন।
আরও পড়ুন: সঙ্কট কাটেনি, সৌমিত্রর স্নায়বিক সমস্যা কাটাতে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা
কিন্তু গোলমাল পরে মেটানো হলেও এখন এই ঘটনায় বিজেপি-র অন্দরের জটিল সমীকরণ প্রকাশ্যে চলে এসেছে। যা আদতে দিলীপ ঘোষ-মুকুল রায় দ্বন্দ্বের দিকেই আঙুল তোলাচ্ছে। সৌমিত্র যুব মোর্চার সভাপতি হয়েছিলেন মূলত কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং মুকুলের ‘পছন্দ’ হিসাবে। কিন্তু তিনি যখন রাজ্য কমিটি তৈরি করেছিলেন, সেটি হয়েছিল দিলীপের পছন্দ অনুযায়ী। দলীয় সূত্রের খবর, তার পরেই সৌমিত্রকে দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়ে ‘যৎকিঞ্চিৎ বার্তা’ দেওয়া হয়েছিল। অতঃপর তিনি যে জেলা কমিটি ঘোষণা করেছেন, তাতে আবার দিলীপ শিবিরের ক্ষোভ জন্মেছে। সেই কারণেই একের পর এক অভিযোগ আসতে শুরু করে রাজ্য সভাপতির কাছে। যার ফলে তিনি সমস্ত কমিটি বাতিল বলে ঘোষণা করে দিয়েছেন। এখন দেখার, পুজোর পর দুই শিবিরের ভারসাম্য রেখে কী ভাবে নতুন কমিটি এবং জেলা যুব মোর্চার সভাপতি ঠিক করা হয়।