জয়নগরের জনসভায় দিলীপ ঘোষ। ছবি: দিলীপ ঘোষের ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত।
‘গণতন্ত্র বাঁচাও’ জনসভায় ফের আক্রমণাত্মক দিলীপ ঘোষ। বুধবার জয়নগরে সভা করতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করেন। রাজ্য বিজেপি সভাপতির হুঁশিয়ারি, ২০২১-এ বিজেপিকে জিতিয়ে সাধারণ মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কালীঘাটের বাড়িতে ফেরত পাঠাবেন।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে জয়নগর ও মথুরাপুর, দুই লোকসভা আসনই বিজেপি জিতে নেবে বলে তৃণমূলকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন দিলীপ ঘোষ। সেই সঙ্গে কড়া ভাষায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘‘ধর্ষণ, নারী ও শিশু পাচারে সবচেয়ে এগিয়ে বাংলা। সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা এখানেই সবচেয়ে বেশি। গণতন্ত্রকে হত্যা করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। খুব শীঘ্র এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি মিলবে। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচন বাংলার জন্য সেমি ফাইনাল। ফাইনাল হবে ২০২১ সালে। বিজেপিকে ক্ষমতায় এনে দিদিমণিকে কালীঘাটের বাড়িতে ফেরত পাঠাবেন সাধারণ মানুষ।’’
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ শারীরিক অসুস্থতার জেরে দিল্লি ফিরে যাওয়ার পর, জনসভায় নেতৃত্ব দিতে আনা হয়েছে কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানিকে। এ দিন জয়নগরে হাজির ছিলেন তিনিও। তৃণমূল সরকারকে তো আক্রমণ করেছেন তিনি। সেইসঙ্গে একহাত নিয়েছেন বিজেপি বিরোধী জোটকেও। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দেন তিনি, ‘‘একদিন সিপিএমের হাত ধরছে কংগ্রেস। আবার একদিন হাত ধরছে মমতার। কার সঙ্গে জোটে যাবে তা ঠিক করে উঠতে পারছে না। তাই মমতাদিদিকেই প্রশ্ন করি, কার সঙ্গে জোট বাঁধতে চান আপনি?’’
জয়নগরের জনসভায় স্মৃতি ইরানি। ছবি: দিলীপ ঘোষের ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত।
আরও পড়ুন: প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতাকে রোজভ্যালি-কাণ্ডে গ্রেফতার করল সিবিআই
আরও পড়ুন: অন্ধ্রেও ‘একলা চলো’, লোকসভা-বিধানসভায় সব আসনে প্রার্থী দেবে কংগ্রেস
বাংলার মানুষের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার একাধিক জনকল্যাণমূলক প্রকল্প এনেছে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যাযের সরকার তা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছতে দিচ্ছেন না বলেও অভিযোগ তোলেন স্মৃতি। তিনি দাবি করেন, ‘‘ইউপিএ সরকারের আমলে বাংলাকে ১ লক্ষ ৩২ হাজার কোটি দেওয়া হয়েছিল। নরেন্দ্র মোদীর সরকার তার চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি টাকা দিয়েছে। কিন্তু সেই টাকা পৌঁছয়নি সাধারণ মানুষের কাছে। এ রাজ্যে বিজেপি কর্মীরা সিপিএম, কংগ্রেস এবং তৃণমূলের অত্যাচার সহ্য করেছে। তা সত্ত্বেও উন্নয়নের রাস্তা থেকে সরে আসেননি। আগে দরিদ্র মানুষ ব্যবসা করতে পারতেন না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর মুদ্রা যোজনার আওতায় ঋণ নিয়ে ব্যবসার সুযোগ এসেছে। তাতে দেড় লক্ষ যুবক-যুবতী নিজেদের স্বাধীন ব্যবসা শুরু করেছেন। পয়সার অভাবে এতদিন বিনা চিকিত্সায় মরতে হতো দরিদ্র মানুষকে। কিন্তু আয়ুষ্মাণ প্রকল্পের আওতায় ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিত্সা পরিষেবা এনেছে মোদী সরকার। কিন্তু বাংলার দরিদ্র মানুষের কাছে তা পৌঁছতে দিচ্ছেন না মমতাদিদি। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চাইলে ফের নরেন্দ্র মোদীকেই ক্ষমতায় ফেরান। বাংলায় বিজেপিকে জেতান। ’’
দিলীপ ঘোষ ও স্মৃতি ইরানি ছাড়াও এ দিন জয়নগরের সভায় হাজির ছিলেন রাজ্যে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু, সহ সভাপতি সুভাষ সরকার, প্রাক্তন বিধায় শমীক ভট্টাচার্য সহ বিভিন্ন রাজ্য ও জেলাস্তরের নেতৃত্ব।