—ফাইল চিত্র।
যাঁরা আত্মসমর্পণ করে অস্ত্র ছেড়েছিলেন, তাঁদের ডেকে বৈঠক করে ফের অস্ত্র ধরতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী— মেদিনীপুরে এসে রবিবার এমনই অভিযোগ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ। শাসক দল অবশ্য এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতির বিরুদ্ধেই প্ররোচনা সৃষ্টির পাল্টা অভিযোগ এনেছে।
বিজেপির আইনজীবী সংগঠনের এক কর্মসূচিতে যোগ দিতে মেদিনীপুরে এসেছিলেন দিলীপবাবু। সেখানেই তিনি বলেন, ‘‘জঙ্গলমহলের মানুষ তৃণমূলের থেকে সরে গিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এখানে এসে যাঁরা পুরনো নকশাল, তাঁদের নিয়ে মিটিং করেছেন। যাঁরা আত্মসমর্পণ করেছেন, অস্ত্র ছেড়ে দিয়েছিলেন, তাঁদেরকে ডেকে আবার অস্ত্র ধরার জন্য বলেছেন। শুভেন্দু অধিকারী এখানে এসে মিটিং করেছেন। তাঁদের ডাকছেন।’’
ঘটনা হল, আত্মসমর্পণকারী মাওবাদী নেতাদের পুনর্বাসন প্যাকেজ দিয়ে অনেককেই পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ার বাহিনীতে নিয়োগ করেছে রাজ্য সরকার। রাজনীতির মূল স্রোতে ফিরে কেউ কেউ আবার তৃণমূলের পদাধিকারীও হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর পুরনো উদ্যোগের কথা তুলেই তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘দিলীপবাবুরা কী চান, সেটা আগে স্পষ্ট হওয়া দরকার! এক দিকে দেশপ্রেমের কথা বলেন, অন্য দিকে এ সব বলছেন! অতি-বাম রাজনীতির নামে যাঁরা সমস্যা তৈরি করতেন, তাঁদের শান্তির পথে টেনে নিয়ে আসা তো দেশ ও সমাজের পক্ষে ভাল কাজ। সেই অতি-বামদের সামনে রেখে দিলীপবাবুরা প্ররোচনা তৈরি করতে চাইছেন, যাতে আবার অশান্তি হয়।’’
ঘটনাচক্রে, বিজেপির রাজ্য সভাপতি ওই অভিযোগ তোলার কয়েক ঘণ্টা পরে খড়্গপুরে সরকারি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু। মাওবাদীদের সঙ্গে বৈঠকের যাবতীয় তথ্যপ্রমাণও তাঁর কাছে রয়েছে বলে দাবি দিলীপের। তাঁর কথায়, ‘‘আমি চ্যালেঞ্জ করছি, সব তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। আবার নকশালদের, মাওবাদীদের দিয়ে মানুষকে ভয় দেখিয়ে জঙ্গলমহলে পরিবর্তনের চেষ্টা করছেন।’’ এর পরেই তিনি তুলেছেন জনসাধারণের কমিটির প্রাক্তন নেতা ছত্রধর মাহাতোর প্রসঙ্গ। দিলীপবাবু বলেন, ‘‘ছত্রধর মাহাতোকে এত দিনে ছাড়ার চেষ্টা চলছে। আবার ছত্রধরের ছাতার তলায় দাঁড়িয়ে দিদিমণি ভোটে জেতার চেষ্টা করছেন। আসলে উনি (মমতা) বুঝতে পারছেন, মানুষ ওঁর সঙ্গে নেই।’’