সুকন্যা মণ্ডল এবং অনুব্রত মণ্ডল। ফাইল চিত্র।
গত সপ্তাহে দিল্লিতে ইডির (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) সদর দফতরে হাজিরা ‘এড়ানোর’ পর সোমবার আবার তাঁকে তলব করা হয়েছিল। সকাল ১১টায় তাঁর হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ইডি সূত্রে খবর, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ইডি দফতরে এসে পৌঁছননি সুকন্যা মণ্ডল। তার পর থেকেই জল্পনা তৈরি হয়েছে, তা হলে কি দ্বিতীয় বার ইডি দফতরে হাজিরা ‘এড়ালেন’ অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা?
গরু পাচার মামলায় অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে ইডি। তার পরেই মেয়ে সুকন্যাকে তলব করা হয়। গত বুধবার তাঁর ইডি দফতরে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই দিন তদন্তকারীদের মুখোমুখি হননি সুকন্যা। আইনজীবী মারফত চিঠি দিয়ে তিনি আর ক’টা দিন সময় চেয়েছিলেন। এর পরেই আবার নোটিস পাঠিয়ে সোমবার সুকন্যাকে ডেকে পাঠায় ইডি। কিন্তু তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, বেলা ১২টা বেজে যাওয়ার পরেও ইডি দফতরে আসেননি সুকন্যা। তিনি যে দিল্লিতে এসেছেন, তেমন কোনও খবরও মেলেনি বলেও জানাচ্ছে তদন্তকারীদের ওই সূত্র।
অনুব্রতের ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, সুকন্যা বর্তমানে বোলপুরের বাড়িতেও নেই। তাঁদের দাবি, তিনি কলকাতায় থাকতে পারেন। কী কারণে অনুব্রত-কন্যা এখনও ইডির মুখোমুখি হননি, সেই ব্যাপারে তাঁরা স্পষ্ট কিছু না জানলেও অনেকের মত, বাবার মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ এড়াতেই সুকন্যা দ্বিতীয় বার ইডির মুখোমুখি হননি। তবে এ ব্যাপারে সুকন্যা বা তাঁর আইনজীবীর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানানো হয়নি।
গত বছর অগস্টে অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পর সুকন্যাকে দিল্লিতে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। সিবিআই সূত্রের দাবি, সেই সময় বিপুল সম্পত্তি সম্পর্কে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হলেও তিনি প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, ওই সব প্রশ্নের উত্তর তাঁর বাবা এবং হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারিই (যিনি এখন ইডি হেফাজতে) দিতে পারবেন। ইডি সূত্রে খবর মিলেছে, সেই কারণেই অনুব্রত ও সুকন্যাকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা ভাবে হয়েছে। তদন্তকারীদের একাংশ মনে করছেন, তাতে রহস্যের জট অনেকটাই খুলবে। কিন্তু সুকন্যা যদি সোমবার ইডির মুখোমুখি না হন, তা হলে বাবা ও মেয়েকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পরিকল্পনা বিলম্বিত হতে পারে। কারণ, মঙ্গলবার অনুব্রতকে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে হাজির করানো হবে। এ বার তৃণমূল নেতার জেল হেফাজত হওয়ার প্রভূত সম্ভাবনা রয়েছে। যদি তা-ই হয়, তা হলে সুকন্যাকে জেলে নিয়ে গিয়ে তাঁর সামনে বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা লম্বা প্রক্রিয়ার বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।