২ ডিসেম্বর, ২০১০
আমরা ঠিক পথেই এগিয়ে চলেছি। বাম্র সাম্রাজ্যের সীমান্ত এলাকায় এসে পৌঁছেছি। সব দেখেশুনে মনে হচ্ছে, আমরা বোধ হয় দখল করে নিতে পারব। যা খবর পাচ্ছি, নগরের মানুষজন খুব ক্ষুব্ধ। ওঁদের সমর্থন নিশ্চয়ই মিলবে। দীপ্তসেনেরাও সব দিক দিয়ে সাহায্য করেছে। আমরা আমাদের পরিকল্পনা মাফিকই এগোচ্ছি। শিবিরের অধিপতিকে প্রতি দিন প্রতিটা বিষয়ে খুঁটিনাটি জানাতে হয়। আমার উপর ভরসা রাখছেন এঁরা। দেখা যাক কী হয়।
২ জুন, ২০১১
গত কয়েক দিন লিখতে পারিনি। সময়ই পাইনি এক দম। চারিদিকে এত আনন্দ, এত উৎসব, এত মানুষের কলরোল। আমরা রাজ্য জয় করে নিয়েছি। এ বার আমাদের আরও এগোতে হবে।
২ ডিসেম্বর, ২০১১
দিনগুলো দারুণ কাটছে। অধিপতি আমার উপর আরও বেশি করে ভরসা করছেন। দীপ্তসেনের সঙ্গে যোগাযোগটা আরও অনেক বেড়ে গিয়েছে। আমাদের শিবিরের বড় সেনাপতিরাই মূলত তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। মিথ্যে কথা বলব না, আমাকেও বড় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
২ ডিসেম্বর, ২০১২
দীপ্তসেন একটু বেশিই বাড়াবাড়ি করছে। এটা ঠিক, ও আমাদের অনেক সাহায্য করেছিল। কিন্তু বেশিই চাইতে শুরু করেছে এ বার। শিবিরের উপর মহলে কানাঘুষো, কানাকানি শুরু হয়ে গিয়েছে। একটু চিন্তা হচ্ছে। কারণ, শিবিরের তরফ থেকে দীপ্তসেনের নৌবহরে রাখা হয়েছে আমাকেই। সমুদ্র যদি খুব উত্তাল হয়, সব ঠিকঠাক থাকবে তো?
২ জুন, ২০১৩
সব কিছু খুব তাড়াতাড়ি পাল্টে যাচ্ছে। আমাদের গুপ্তচরেরা খবর এনেছিল, দীপ্তসেন বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। পর্বত কন্দরে গা ঢাকা দিয়েছিল সে। রক্ষীরা তাকে সেখান থেকে বন্দি করে এনেছে। আমাদের শিবিরজুড়ে টালমাটাল। অনেকেই জড়িয়ে রয়েছে। কী হবে বলতে পারছি না।
২ জুন, ২০১৫
অনেক দিন লিখিনি। সত্যি কথা বলতে কি, কাজ অনেক বেড়ে গিয়েছে। আমার উপর ভরসা রাখছেন অধিপতি। দীপ্তসেনকে নিয়ে মানুষ আলোচনা করে ঠিকই। তবে ওরা বোধ হয় পারবে না আমাদের সঙ্গে। অবশ্য শত্রু যে কোথায় কী ভাবে লুকিয়ে রয়েছে, বলা মুশকিল। সাবধানে চলছি। বেশি বলা, বেশি লেখা এখন খুব মুশকিলের।
২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫
পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে। সবাই যেন কেমন ভাবে তাকাচ্ছে আমার দিকে। আমার শিবিরের অনেক সেনাধিনায়কের ব্যাপারেই জানি— দীপ্তসেনের সঙ্গে কী রকম যোগাযোগ তাদের। এ দিকে শত্রুরাও শুনছি জাল গোটাচ্ছে। আমি বিপদে পড়ব না তো? পড়লে কিন্তু...
২ ডিসেম্বর, ২০১৫
খুব লুকিয়ে লিখছি। কথা বলা বারণ। শত্রুদের শিবিরে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল আমাকে। অনেক প্রশ্ন। অনেক কথা আমিও...
১৪ ডিসেম্বর, ২০১৫
কী ভাবে লিখব বুঝে উঠতে পারছি না। এক দিনে আমার সব কিছু পাল্টে গেল। আজ আবার শত্রুরা নিয়ে গেল আমাকে। অল্প সময় থাকতে হল। কিন্তু নিজেদের শিবিরে ফেরা মাত্রই জানলাম, আমার অর্ধাধিনায়ক পদ কেড়ে নেওয়া হয়েছে। শিবির থেকেও উৎখাত করা হয়েছে আমাকে। পুরো সরাতে পারছে না। এ রকম কেন করল ওরা? সবই তো জানে! আমি সব জানি, সেটাই কি আমার কাল হল? দেখা যাক। পরে আবার লিখব। তার আগে একটা মিরাকিউরল বড়ি খাই। দেখি সব কিছু আবার ঠিক হয় কি না।
অঙ্কন: সুমন চৌধুরী।