প্রচারের ফাঁকে এক ধর্মীয় সভায় পিসি সরকার। ছবি: শান্তনু হালদার।
জনগণ যেন তাঁকে দেখে না ভাবেন তিনি ম্যাজিক করতে এসেছেন। তিনি এসেছেন এখানকার মানুষের সঙ্গে যে অন্যায় হয়ে চলেছে তার বিরুদ্ধে লড়তে। বারাসতে নিজের লোকসভা কেন্দ্রে প্রচারে এসে সোমবার অশোকনগরে এ ভাবেই এলাকার মানুষের সঙ্গে একাত্ম হওয়ার চেষ্টা করলেন বিজেপি প্রার্থী জাদুকর পি সি সরকার।
প্রার্থী হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণার পর গোটা বারাসত কেন্দ্র জুড়ে ভোটারদের একটাই প্রশ্ন, ভোটের ফল ম্যাজিক দিয়ে ‘নিয়ন্ত্রিত’ হবে না তো! তার কারণ প্রার্থী যে বিখ্যাত ম্যাজিশিয়ান। যদিও প্রচারে বেরিয়ে এ দিন পথচলতি মানুষের কাছে এমন প্রশ্ন শুনে ঈষৎ উত্তেজিত প্রার্থী। বললেন, “ম্যাজিক করতে নয়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতেই এসেছেন।”
গায়ে সাদা পাঞ্জাবি-পাজামার উপরে খয়েরি রঙের জহরকোট। প্রচারে হাঁটতে হবে জেনেও স্নিকার্সের বদলে কোলাপুরিতেই স্বচ্ছন্দ তিনি। গোঁফের দু’দিকের কোণটা উপরের দিকে ঈষৎ গোটানো। সোমবার বিকেল থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই পোশাকেই চষে বেড়ালেন অশোকনগর-কল্যাণগড় এলাকায়। এসেছিলেন এক ধর্মীয় সংগঠনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। অনুষ্ঠানের পর সেরে নিলেন জনসংযোগও। জাদুকরকে দেখতে ভিড়ও করেছিলেন প্রচুর মানুষ। সকলের প্রতিই করজোড়ে জাদুকর। হাত নেড়ে তাঁকেও স্বাগত জানিয়েছে উৎসাহী জনতা।
হঠাৎ ভোটের ময়দানে?
সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জন্য বোধহয় আগে থেকে তৈরি ছিলেন জাদুকর। ভেসে এল ঝটিতি উত্তর, “দেশের স্বার্থে।” একটু থেমে ফের মন্তব্য, “আপনাদেরও রাজনীতিতে নামানো উচিত। কারণ অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে সমস্ত মানুষের এগিয়ে আসা উচিত।” নির্বাচনে দাঁড়াতে তাঁর ‘অন্তর ঈশ্বর’ সায় দিয়েছেন জানিয়ে পি সি বলেন, “বিজেপি-র মাথায় রয়েছেন স্বামী বিবেকানন্দ।” জাদুকর হিসাবে তাঁর জনপ্রিয়তা ভোটের বাক্সে প্রভাব ফেলবে কি না জানতে চাওয়া হলে বিজেপি প্রার্থীর জবাব, জাদুর মঞ্চ আর রাজনীতির মঞ্চের মধ্যে কোনও পার্থক্য তাঁর কাছে নেই। হঠাৎই ভিড়ের মধ্যে থেকে ভেসে এল মহিলা কণ্ঠ, ‘আপনি সমস্ত অন্যায়কে ভ্যানিশ করে দিন’। শুনে হেসে ফেললেন জাদুকর। জয়ের ব্যাপারে যে তিনি ‘হান্ড্রেড পার্সেন্ট’ নিশ্চিত, গাড়িতে ওঠার আগে তা জানাতে ভুললেন না পি সি। দলের তরফে জেলার সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব হালদার জানান, আগামী ২৮ মার্চ হাবরায় রোড শো ও কর্মী বৈঠক হবে। ওই দিন থেকে লাগাতর প্রচারও শুরু হবে।