গোলমাল থামাতে যাচ্ছেন নিরাপত্তা রক্ষীরা। মঙ্গলবার আরামবাগে তোলা নিজস্ব চিত্র।
ভোটের ঠিক এক দিন আগে, রাজনৈতিক অশান্তিকে ঘিরে তপ্ত হল আরামবাগ। শহরের গৌরহাটি মোড়ে মঙ্গলবার সিপিএম এবং তৃণমূূল কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে মার-পাল্টা মারে জখম হলেন ১০ জন। পুলিশ এবং র্যাফ গিয়ে লাঠি চালিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। আহতদের মধ্যে দুই তৃণমূল কর্মীকে আরামবাগ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বাকিদের স্থানীয় ভাবে প্রাথমিক চিকিত্সা হয়। গোলমালে জড়িত অভিযোগে স্থানীয় সিপিএম নেতা তরুণ রায়-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ সিপিএমের আরামবাগ-১ নম্বর লোকাল কমিটির সদস্য তরুণ রায় গৌরহাটি মোড় সংলগ্ন এলাকায় দলের বেশ কিছু পোস্টার-ফেস্টুন রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে সেগুলি তুলে ফের যথাস্থানে বাঁধছিলেন। অভিযোগ, কয়েক জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থক তা দেখতে পেয়ে তরুণবাবুর হাত থেকে সেগুলি ফেলে দিয়ে তাঁকে মারধর করে। দুই সিপিএম সমর্থক সেখান থেকে তরুণবাবুকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান। পরে তৃণমূলের লোকজন তবরেজেল হক ওরফে শেলি এবং শেখ রাজা খান নামে ওই দুই সিপিএম সমর্থককে থানার অদূরেই রড-লাঠি দিয়ে মারধর করে বলে অভিযোগ ওঠে। কিন্তু এর পরেও গোলমাল থামেনি। স্থানীয় কাজিপাড়া থেকে মহিলা-সহ বেশ কিছু সিপিএম কর্মী-সমর্থক লাঠি-বাঁশ-রড নিয়ে বেরিয়ে এসে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের উপরে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। মারের চোটে গুরুতর জখম বিবেকানন্দ পল্লির রঞ্জিত মজুমদার এবং বৃন্দাবনপুরের দেবকুমার কুণ্ডু নামে দুই তৃণমূল কর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সিপিএম সমর্থক তবরেজেল বলেন, “আমি তরুণদাকে থানায় পৌঁছে দিয়ে নিজের ওষুধের দোকানে বসা মাত্র তৃণমূলের জনা কুড়ি ছেলে দোকানে ঢুকে মারল। নগদ ১৩ হাজার টাকা লুঠ করেছে।” পাল্টা তৃণমূল কর্মী রঞ্জিত মজুমদার বলেন, “আমি গোলমাল থামাতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ওরা আমাকে লাঠি দিয়ে পেটাল।”
এই ঘটনা নিয়ে আরামবাগ কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী শক্তিমোহন মালিক বলেন, “বিনা কারণে আমাদের দলের নেতাকে মারা এবং এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করার ঘটনা প্রত্যক্ষ করে এলাকার মানুষই তৃণমূলের ছেলেদের শিক্ষা দিয়েছেন।” পক্ষান্তরে, আরামবাগের তৃণমূল বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা বলেন, “নির্বাচনী প্রচার শেষ হওয়ার পরেও সিপিএম প্রচার সংক্রান্ত পোস্টার-ফেস্টুন লাগাচ্ছিল। আমাদের ছেলেরা তার প্রতিবাদ করায় হামলা চালাল সিপিএম।”