সংকল্পপত্র জমা দিচ্ছে পড়ুয়ারা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
পড়ুয়াদের দিয়ে বাবা-মা ও পরিবারের কাছে ভোট দেওয়ার ‘অঙ্গীকার’ চেয়ে পাঠাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। তৈরি করা হয়েছে একটি সঙ্কল্পপত্র যেখানে পড়ুয়ার মিনতি তার বাবা-মা ও পরিবারকে, “সকলের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বার্থে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তোমরা সকলে ভোট দেওয়ার অঙ্গীকার কর।”
ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে সেই সঙ্কল্পপত্র শিক্ষা দফতরের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে। কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে অভিভাবকেরা যাতে ভোট দেন, তার জন্য পড়ুয়াদের যুক্ত করে বাবা-মাকে ভোট দানের অঙ্গীকার করানো হচ্ছে। চিঠির শুরুতেই ‘পূজনীয় বাবা অথবা মা’, আর চিঠির শেষে অঙ্গীকার করার জায়গা। যেখানে লেখা রয়েছে, “আমরা সকলে মিলে অঙ্গীকার করছি, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে আমরা অবশ্যই ভোট দেব।” যা
প্রথমবার দেখে রীতিমতো ঘাবড়ে গিয়েছিলেন পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা। তাঁরা জানান, প্রথমে বুঝতে পারেননি নির্বাচন কমিশনের তরফে তা পাঠানো হয়েছে। মনে হয়েছিল রাজনৈতিক উদ্দেশে পাঠানো হয়েছে। অনেকেই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে ফোন করে বিষয়টি জানেন।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা স্কুল শিক্ষা দফতর থেকে জানানো হয়েছে, জেলার প্রাথমিক স্কুলের জন্য দশ হাজার, ব্যারাকপুর মহকুমার জন্য ১০ হাজার ও বাকি স্কুলের জন্য ১০ হাজার সঙ্কল্পপত্র পাঠানো হয়েছে। বনগাঁ হাইস্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার শিক্ষা দফতর থেকে ৪০০টি সঙ্কল্পপত্র এসেছে। সে দিনই পড়ুয়াদের দিয়ে দেওয়া হয় সেগুলি। যদিও সব পড়ুয়াকে দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত সঙ্কল্পপত্র ছিল না তাদের কাছে। তার পরে শুক্রবার স্কুলের ক্লাস না হলেও ২০০টি সঙ্কল্পপত্র জমা দিয়ে দিয়েছে পড়ুয়ারা। প্রধান শিক্ষক দিলীপ ঘোষ জানান, ছাত্ররা বিষয়টি বুঝতে না পারলেও তাদের উৎসাহ ছিল দেখার মতো। তিনি বলেন, “ছাত্ররা সঙ্কল্পপত্র বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পরে কয়েক জন অভিভাবক আমায় ফোন করে বিষয়টি জানতে চান। তাদের মনে হয়েছিল, হঠাৎ কেন স্কুলের পক্ষ থেকে এমন একটা সঙ্কল্পপত্র দেওয়া হল।” পরে তাঁরা বুঝতে পারেন নির্বাচন কমিশন থেকে পাঠানো হয়েছে ওই সঙ্কল্পপত্র। এক অভিভাবকের কথায়, “প্রথম দিকে ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। মাথায় দুশ্চিন্তাও এসেছিল। পরে অবশ্য ভুল ভেঙেছে।” অপর এক জন অভিভাবিকা বলেন, “প্রথমে ভেবেছিলাম, এর পিছনে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। কিন্তু পরে দেখলাম, তা নয়। আমরা সকলেই ভোট দিতে যাব। দিলীপবাবু জানান, এখনও স্কুলের সব পড়ুয়াদের হাতে নির্বাচন কমিশনের ওই সঙ্কল্পপত্র দেওয়া যায়নি। আরও প্রয়োজন ছিল।
জেলা স্কুল পরিদর্শক অমর শীল বলেন, “জেলাশাসকের দফতর থেকে ওই সঙ্কল্পপত্র পাঠানো হয়েছে। উদ্দেশ্য পড়ুয়াদের দিয়ে বাবা-মাকে ভোট দানে উৎসাহিত করা। যত সঙ্কল্পপত্র পাওয়া গিয়েছে, তা জেলার সব স্কুলে দেওয়া সম্ভব না। ১০ এপ্রিলের মধ্যে স্কুল থেকে তা জেলাশাসকের দফতরে জমা দেওয়া হবে।”