পরিকাঠামোর অভাব মৃত্যুর শংসাপত্র পেতে হয়রানি হাওড়ায়

দাহ করার পরে কয়েক মাস পার হয়ে গিয়েছে। কিন্তু মৃতের আত্মীয়রা কখনও শ্মশান ঘাটে, কখনও বা পুরসভায় হন্যে হয়ে ঘুরছেন। কারণ, তখনও তাঁদের হাতে আসেনি মৃত্যুর শংসাপত্র। এমনই অভিযোগ করছেন হাওড়াবাসীরা। শংসাপত্র দিতে কিছুটা দেরি হওয়ার কথা মেনেও নিয়েছে হাওড়া পুরসভা।

Advertisement

সুপ্রিয় তরফদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৪ ০১:২৯
Share:

দাহ করার পরে কয়েক মাস পার হয়ে গিয়েছে। কিন্তু মৃতের আত্মীয়রা কখনও শ্মশান ঘাটে, কখনও বা পুরসভায় হন্যে হয়ে ঘুরছেন। কারণ, তখনও তাঁদের হাতে আসেনি মৃত্যুর শংসাপত্র। এমনই অভিযোগ করছেন হাওড়াবাসীরা। শংসাপত্র দিতে কিছুটা দেরি হওয়ার কথা মেনেও নিয়েছে হাওড়া পুরসভা।

Advertisement

শিবপুর, বাঁশতলা ও বাঁধাঘাট হাওড়া পুর-এলাকায় মোট তিনটি শ্মশান রয়েছে। এর মধ্যে বাঁশতলা ছাড়া বাকি দু’জায়গায়ই বৈদ্যুতিক চুল্লি রয়েছে। পাশেই রয়েছে অফিসও। কিন্তু সেখান থেকে তৎক্ষণাৎ ডেথ সার্টিফিকেট পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ উঠছে। যেমন স্থানীয় বাসিন্দা

সুব্রত রায় বললেন, “তিন সপ্তাহ ধরে ঘুরছি। এখনও মায়ের ডেথ সার্টিফিকেট হাতে পেলাম না। যত বারই যাই তত বারই বলে কাগজপত্র পুরসভায় পাঠানো হয়েছে, সেখান থেকে কোনও জবাব আসেনি।”

Advertisement

হাওড়া পুর এলাকায় মৃত্যুর শংসাপত্র দেওয়ার গোটা প্রক্রিয়াটি কী ভাবে সম্পন্ন হয়?

পুরসভা সূত্রের খবর, কোনও শবদেহ শ্মশানে পৌঁছনোর পরে সেখানে থাকা পুরকর্মীদের কাছে চিকিৎসকের দেওয়া ডেথ সার্টিফিকেট জমা দিতে হয়। সেই শংসাপত্র যাচাই করে কর্মীরা দেহ দাহ করার জন্য নির্ধারিত টাকা নিয়ে একটি রসিদ দেন। প্রায় কুড়ি দিন পরে মৃতের আত্মীয়দের সেই রসিদ জমা দিয়ে শ্মশান থেকে সার্টিফিকেট নিতে বলা হয়। অভিযোগ, নির্দিষ্ট দিনে গিয়েও শংসাপত্র মেলে না। বলা হয় পুরসভায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও পুরসভার অভিযোগ, মৃতের আত্মীয়রা শ্মশানে যেতে দেরি করলেই পুরসভায় সার্টিফিকেট চলে আসে।

হাওড়া ময়দান এলাকার বাসিন্দা এক মহিলা জানান, তাঁর স্বামী উলুবেড়িয়ার জলপ্রকল্পে কাজ করতেন। গত বছরের অক্টোবরে তিনি মারা যান। শিবপুর শ্মশানে তাঁকে দাহ করা হয়। কিন্তু ডেথ সার্টিফিকেট পেতে অনেক দেরি হয়েছিল। তিনি বলেন, “আমার একটি দশ বছরের মেয়ে রয়েছে। তাকে নিয়ে ডেথ সার্টিফিকেট পেতে বার বার শিবপুর শ্মশানে ছুটে যেতে হয়েছিল। স্বামীর অফিস থেকে টাকা পেতে সমস্যা হয়েছিল। অবিলম্বে এই প্রক্রিয়াটি বদলানো দরকার।”

কলকাতা পুরসভায় এই কাজটি অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে হয়। কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, কলকাতা পুর এলাকার শ্মশানে সব সময়ই এক জন মেডিক্যাল অফিসার থাকেন। কলকাতা পুর-এলাকায় মৃত্যু হলে তিনি চিকিৎসকের শংসাপত্র যাচাই করেন। তিনি মৃতদেহটি দেখেনও। দাহের পরেই শ্মশানের অফিস থেকে ডেথ সার্টিফিকেট পাওয়া যায়।

হাওড়া পুরসভা সূত্রের খবর, এখানে শ্মশানে কোনও মেডিক্যাল অফিসার থাকেন না। পুরসভায় রয়েছে মাত্র এক জন স্বাস্থ্য আধিকারিক। তিনটি শ্মশান থেকে চিকিৎসকের শংসাপত্রের ফোটোকপি এবং শ্মশানে জমা দেওয়া অর্থের প্রমাণপত্র ওই স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে পাঠানো হয়। তিনি তা যাচাই করে আবার শ্মশানে পাঠান। তাই সময় লাগে।

হাওড়া পুরসভা সূত্রের খবর, পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে। সমস্যার দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement