স্তম্ভ আছে। নেই আলো।—নিজস্ব চিত্র।
শহরকে সুন্দর করে সাজানোর জন্যে বিভিন্ন শহরে ত্রিফলা আলো লাগানো হয়েছে। হাওড়ার মহকুমা শহর উলুবেড়িয়া শহরেও তা লাগানো হয়। কিন্তু লাগানোর পর মাস খানেক তা আলো দিলেও তারপর থেকে আর তা জ্বলতে দেখা যায়নি। প্রায় দু’বছর হল ওই সব আলো বিকল হয়ে রয়েছে। উলুবেড়িয়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালে উলুবেড়িয়া স্টেশন মোড় থেকে উলুবেড়িয়া কলেজ পর্যন্ত তিনটি রাস্তার ধারে ৬০টি ত্রিফলা আলো লাগানো হয়। যদিও এ জন্য কত টাকা খরচ হয়েছে তার উত্তর আজও মেলেনি পুর কর্তৃপক্ষের কাছে। শহরের অধিকাংশ ত্রিফলা বাতিস্তম্ভই দেখা যাচ্ছে ঘাড় ভেঙে ঝুলতে। কোনটায় আবার স্তম্ভে বাতিই নেই।
উলুবেড়িয়া পুরসভার ভাইস-চেয়ারম্যান তৃণমূলের নাজিমা খান বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। খুব শীঘ্রই সমস্ত ত্রিফলা মেরামত করে আলো জ্বালানোর ব্যবস্থা করা হবে।”
কেন এই অবস্থা?
পুরসভার এক কর্তার কথায়, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছিল পুরসভার পক্ষ থেকে। কিন্তু সঠিক সময়ে তাঁকে টাকা না দিতে পারায় সেই ঠিকাদার কাজ করেনি।” যে রাস্তার ধারে ত্রিফলা আলো লাগানো হয়েছে তা উলুবেড়িয়া পুরসভার ৭নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়ে। ওই ওয়ার্ডের পুরপিতা বিজেপির পাপিয়া মণ্ডল বলেন, “ত্রিফলা আলো লাগানোর সময়ই বলেছিলাম যে ভেপার লাইট তো লাগানো রয়েইছে। তার নীচে ফুটপাতের ধারে ত্রিফলা আলো লাগালে শহর সুন্দর দেখাবে না। তা ছাড়া বাড়তি খরচের ব্যাপারও রয়েছে। কিন্তু তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ড আমাদের কথা শোনেনি।”
শহরে রাস্তায় যেখানে ভেপার আলো রয়েছে, সেখানে ফের ত্রিফলা আলোক কী সত্যিই প্রয়োজন ছিল?
পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান কংগ্রেসের সাইদুর রহমান বলেন, “বর্তমানে পুরসভা যাঁরা চালাচ্ছেন তাঁদের পুরসভার ভৌগলিক আবস্থান সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই। কী ভাবে শহরকে সাজাতে হয় তা জানেন না।” পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের সাবিরুদ্দিন মোল্লার কথায়, “ত্রিফলার নাম করে সারা রাজ্যে তৃণমূল যে দুর্নীতি করছে তা আর মানুষের অজানা নেই। সৌন্দর্যায়নের কথা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা চুরি করছে শাসকদল।” স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, পুর এলাকায় এমন বহু এলাকা রয়েছে যেখানে আলো পৌঁছয়নি। সেখানে ত্রিফলা আলোর ব্যবস্থা করা যেতে পারত। কিন্তু তা না করে যেখানে আলো রয়েছে সেখানেই ফের আলো লাগানো হল। তাঁদের মতে, যে টাকা ত্রিফলা লাগাতে খরচ হয়েছে সেই টাকায় শহরের অন্য কাজ করা যেত।