আহত বিজেপি কর্মীদের হাসপাতালে দেখতে গেলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার দুপুরে রিষড়ার উদ্দেশে রওনা হয়েও পথে আটকে পড়েন সুকান্ত মজুমদার। — নিজস্ব চিত্র।
হুগলির হিন্দমোটরে আহত বিজেপি কর্মীদের হাসপাতালে দেখতে গেলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার সেখানে গিয়ে স্থানীয় বিজেপি বিধায়কের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। তবে হিন্দমোটর গেলেও শুভেন্দু রিষড়ার দিকে আসেননি। তিনি জানিয়েছেন, ১৪৪ ধারা উঠে গেলে ওই এলাকার মানুষের সঙ্গে দেখা করবেন। অন্য দিকে, সোমবার দুপুরে রিষড়ার উদ্দেশে রওনা হয়েও পথে আটকে পড়েন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর সঙ্গে ছিলেন পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো। বিজেপির অভিযোগ, কোন্নগরে সুকান্তের গাড়ি আটকে দেয় পুলিশ।
সোমবার হিন্দমোটরে আহত বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে হাসপাতালে এসে দেখা করেন শুভেন্দু। পুরশুড়ার বিজেপি বিধায়ক বিমান ঘোষের সঙ্গে কথা বলেন। শুভেন্দু জানান, তিনি রিষড়ায় যাবেন না। তাঁর কথায়, ‘‘১৪৪ ধারা যদি উঠে যায়, তখন ওই এলাকার মানুষের বাড়ি গিয়ে কথা বলব।’’
অন্য দিকে, রিষড়া যাওয়ার পথে বিশালাক্ষীতলায় ফের পুলিশি বাধার মুখে পড়েন বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত। রবিবার শিবপুর যাওয়ার পথেও পুলিশি বাধার মুখে পড়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত যদিও শিবপুর পৌঁছতে পেরেছিলেন তিনি। সোমবার ফের পুলিশি বাধার মুখে পড়ে সুকান্ত বলেন, ‘‘ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তৃণমূল সাংসদ যেতে পারছেন, আমরা যেতে পারছি না! পুলিশ মার খেয়ে চলে এলে জনগণ কার ভরসায় থাকবে?’’
তবে বাধা পেয়ে রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি কর্মীরা। গাড়ি থেকে নেমে এসে তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন সুকান্ত। পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় বলেন, ‘‘শুধু সুকান্তকে কেন আটকানো হচ্ছে, তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কেও করা হোক। যাঁরা রবিবার আহত হয়েছেন, তাঁদের বাড়িতে যেতে চাই দেখা করতে। যেখানে ১৪৪ ধারা নেই সেখানেই যেতে চাই। অথচ আটকানো হল।’’ তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, যেখানে রবিবার ‘হিংসা’ হয়েছে, সেখানে কী করে তৃণমূলের সাংসদ ঘুরে বেড়াচ্ছেন? তৃণমূলের চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর ঘুরে বেড়াচ্ছেন? জ্যোতির্ময় পুলিশের দিকেও আঙুল তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা কর্মকর্তাদের এই পরস্থিতিতে ফেলে দিতে পারি না। পুলিশ চায়, আমাদের কর্মকর্তাদের উপর এ ধরনের অত্যাচার হোক। কাল পুলিশের সামনেই হয়েছে। যত ক্ষণ না তাদের সঙ্গে দেখা করছি, এখান থেকে যাব না। দেখা করেই যাব। যেখানে ১৪৪ ধারা নেই, সেখানেই যাব। প্রশাসনের থেকে সহযোগিতা পাওয়া যাবে না বলে যাচ্ছি।’’
রবিবার রিষড়ার সন্ধ্যাবাজার এলাকায় বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের মিছিলে অশান্তি ছড়ায়। সেখানে ইটবৃষ্টি এবং অগ্নি সংযোগের অভিযোগ উঠেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে পুলিশ। সংঘর্ষের ঘটনায় হুগলির পুরশুড়ার বিজেপি বিধায়ক বিমান ঘোষ জখম হন বলে অভিযোগ। আবার রিষড়া থানার ওসি পিয়ালি বিশ্বাস-সহ কয়েক জন পুলিশকর্মীও জখম হয়েছেন বলেও খবর পুলিশ সূত্রে। ঘটনার পর এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় বসেছে পুলিশ পিকেট। সোমবার সকাল থেকে এলাকায় প্রচার চালানো হল পুলিশের তরফে। অকারণে বাইরে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে জনসাধারণকে। পাশাপাশি, নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ১৪৪ ধারা মেনে চলারও।