যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতরের। — ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় আইন ভেঙে কার্যকরী সমিতি (ইসি)-র বৈঠক ডেকেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ! এই অভিযোগ করে বিশ্ববিদ্যালয়কে শুক্রবার চিঠি দিল রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতর। তাতে জানাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী উপাচার্য নেই। অস্থায়ী উপাচার্য ইসির বৈঠক ডাকতে পারেন না। এ বিষয়ে রাজ্যের ‘সম্মতি’-ও নেওয়া হয়নি। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, এর পরেও বৈঠক হলে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টিগোচরে আনা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, উপাচার্য জানিয়েছেন ইসির বৈঠক হবে।
শনিবার বিকেল ৫টায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দশম কার্যকরী সমিতির ৩৬তম বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। অনলাইন মাধ্যমে। এই বিষয়টি উল্লেখ করে রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতর চিঠিতে জানিয়েছে, ‘‘যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নেই। বুদ্ধদেব সাউ উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করছেন।’’ তারা আরও জানিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের সম্মতি ছাড়া সেখানে ইসির বৈঠকের আয়োজন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় আইন (২০১৯)-এর ৩(৫) ধারা লঙ্ঘন করছে। উচ্চ শিক্ষা দফতর এই বিষয়ে কোনও সম্মতি দেয়নি বলেও জানানো হয়েছে। এই বিষয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার কথা বলা হয়েছে চিঠিতে।
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছিল, রাজ্যপাল আর অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করতে পারবেন না। বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ আরও জানিয়েছিল, সম্প্রতি রাজ্যপাল যাঁদের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করেছেন, তাঁরা কোনও সুযোগ-সুবিধা পাবেন না। তাঁরা নিতে পারবেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। শিক্ষা দফতরের একটি সূত্র জানিয়েছে, এই পর্যবেক্ষণ মেনে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বুদ্ধদেব কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। নিয়ম ভেঙে ইসিও ডাকতে পারেন না। এই প্রসঙ্গে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ইসির বৈঠক ডাকার কোনও অনুমতি নেই বলেই জানি। এর পরেও বৈঠক হলে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টিগোচরে আনব।’’
সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, রাজ্য সরকার, রাজ্যপাল এবং ইউজিসি (বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন)-কে তিন থেকে পাঁচ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম সুপারিশ করতে হবে সার্চ কমিটির জন্য। সেই সার্চ কমিটিই নিয়োগ করবে উপাচার্য। সূত্রের খবর, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর সব পক্ষ নাম সুপারিশ করলেও সার্চ কমিটি এখনও তৈরি হয়নি।