জ্বর, ডেঙ্গির প্রকোপ শুরু দেগঙ্গায়। ছবি: সজল কুমার চট্টোপাধ্যায়
শাসক দলের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে’র জেরে পঞ্চায়েতের কাজকর্ম বন্ধ ছিল এতদিন। ফলে ডেঙ্গি রোধের কাজকর্মও শিকেয় উঠেছিল। আর তারই মাশুল দিতে হচ্ছে দেগঙ্গার সাধারণ মানুষকে।
ইতিমধ্যেই ওই এলাকায় শুরু হয়েছে জ্বর। কয়েক জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণুও মিলেছে। শুক্রবার একজনের মৃত্যুর পর শনিবার থেকে কিছুটা নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। ২০১৭ সালে ডেঙ্গি ও অজানা জ্বরে শতাধিক মানুষের মৃত্যু ছাড়াও আক্রান্তের সংখ্যা কয়েক হাজার ছাড়ায় দেগঙ্গায়। সম্প্রতি মধ্যমগ্রামে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনিক বৈঠকে এসে দেগঙ্গার ডেঙ্গি প্রসঙ্গে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরকে সতর্ক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই জেলার হাবরায় ডেঙ্গিতে বেশ কয়েক জনের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার ঝিকুরিয়া দাসপাড়ার বাসিন্দা মিঠুন দাসের মৃত্যু হয় বারাসত জেলা হাসপাতালে। রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়েছিল বলে দাবি। পঞ্চায়েত ভোটের এতদিন পর শুক্রবারই গঠন হয় পঞ্চায়েতের উপসমিতি। ফলে প্রধান ঠিক হলেও এতদিন কাজ করতে পারেনি পঞ্চায়েত। সেখানে গিয়ে দেখা গেল, পঞ্চায়েতের গুদামে মশা মারার কামানে পড়েছে ধুলোর আস্তরণ। তৃণমূলের প্রধান মাশকুরাবিবি বলেন, ‘‘নিজেদের গোলমালের জন্য উপসমিতি না হওয়ায় আগে কাজ বন্ধ ছিল। তবে মাসখানেক হল, আমরা ডেঙ্গি প্রতিরোধে নেমেছি। আর বিডিও থেকে নির্দেশ না আসায় ধোঁয়া দেওয়ার মেশিন পড়ে আছে।’’
এ বার ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে হাবরা সংলগ্ন দেগঙ্গার আমুলিয়া পঞ্চায়েত এলাকায়। ইতিমধ্যেই ওই পঞ্চায়েতের ঝিকুরিয়া, চক কলাপোল, কলাপোল ও মল্লিকাটি এলাকায় শতাধিক মানুষ জ্বরে আক্রান্ত। পঞ্চায়েত সূত্রেই খবর, তার মধ্যে প্রায় ৫০ জন জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি। কয়েক জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণুও মিলেছে। শনিবার সেখানে দেখা গেল, ঘরে ঘরে জ্বর। মাথায় জল ঢেলে চলেছে পরিবার। বাড়ি বাড়ি জ্বরের খবর নিয়ে ওষুধ বিলি করছেন আশাকর্মীরা।
গণেশ দাস নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘একজনের মৃত্যুর পর জ্বরের খবর নিতে আসছে সরকারি কর্মীরা। অথচ এতদিন কারও ঘুম ভাঙেনি।’’ সরকারি ভাবে দেগঙ্গায় ২০ জন, আমুলিয়ায় ৭ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে বলে জানান দেগঙ্গার বিডিও সুব্রত মল্লিক। তাঁর দাবি, ‘‘প্রশাসনের তরফে কাজ হচ্ছে। তবে আমুলিয়া পঞ্চায়েতে উপসমিতি গঠন নিয়ে অসুবিধা থাকায় এতদিন পঞ্চায়েত তাদের তহবিল থেকে ঠিকমতো কাজ করতে পারেনি।’’