ডেঙ্গি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে মালবাজারে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। —নিজস্ব চিত্র।
উত্তরবঙ্গের ডেঙ্গি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে একটি বিশেষজ্ঞ দল পাঠানোর নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সপ্তাহ দুয়েক ধরেই উত্তরের মালবাজারের একাধিক এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, মালবাজারের ওদলাবাড়ি এবং বাগরাকোট এলাকায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত শতাধিক। যদিও সরকারি মতে, সংখ্যাটি ৪৬।
মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে ওই জেলা-সহ উত্তরের ডেঙ্গি এবং করোনা পরিস্থিতির খোঁজ নেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘করোনার প্রকোপ কমছে। এখন ডেঙ্গি বাড়ছে। উত্তরবঙ্গে ডেঙ্গির প্রকোপ একটু বেড়েছে।’’ স্বাস্থ্য দফতরের উদ্দেশে তাঁর নির্দেশ, ‘‘উত্তরে একটা এক্সপার্ট টিম পাঠাও। মশারির প্রয়োজন হলে তা-ও দিও।’’
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের আগেই অবশ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা মালবাজারের ডেঙ্গি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসেন। ওই দলে ছিলেন ডিরেক্টর অব হেল্থ সার্ভিস (জনস্বাস্থ্য) অসিত বিশ্বাস-সহ স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞরা।
২০১৮ সালেও বাগরাকোট এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ বেড়েছিল। আবারও একই রকম পরিস্থিতি যাতে না হয়, সে দিকে নজর রাখছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। তাদের দাবি, ওদলাবাড়ি এবং বাগরাকোট এলাকায় এখনও পর্যন্ত অন্তত ৪৬ জনের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। এ ছাড়া, জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে রয়েছেন বহু রোগী। তাঁদেরও স্বাস্থ্যপরীক্ষা শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর। ওদলাবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতাল এখনও পর্যন্ত ১৬ জন রোগী চিকিৎসাধীন বলে খবর। যদিও স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, এই মুহূর্তে গ্রামীণ হাসপাতালে ৬ জন ডেঙ্গি রোগী চিকিৎসাধীন।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ভবন থেকে আসা ওই বিশেষ দলটি ওদলাবাড়ি এলাকায় জ্বরে আক্রান্তদের বাড়ি যায়। ডেঙ্গির উপসর্গযুক্তদের বাড়িও পরিদর্শন করে দলটি। রোগীদের পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেন স্বাস্থ্যকর্তারা।
স্বাস্থ্য দফতরের অনুমান, বাড়ির মধ্যে জমা জলে ডেঙ্গির লার্ভা জন্মাচ্ছে। তা থেকেই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ডিরেক্টর অব হেল্থ সার্ভিস (জনস্বাস্থ্য) অসিত বিশ্বাস বলেন, ‘‘গত দু’সপ্তাহ ধরে এখানে ডেঙ্গি হচ্ছে। প্রতিটি বাড়ির পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখলে ডেঙ্গি প্রতিরোধ করা যাবে। বাড়ির ছোট ছোট টব ইত্যাদিতে যাতে জমা জল না থাকে, তা-ও নজর রাখতে হবে। তবে পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক নয়। ডেঙ্গি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে বাড়িতে বা হাসপাতালে চিকিৎসা করা হবে।’’
যদিও গোটা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য দফতরের গাফিলতির অভিযোগ করেছেন বিজেপি। মাদারিহাটের বিজেপি বিধায়ক তথা বিধানসভার চিফ হুইপ মনোজ টিগ্গার দাবি, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের গাফিলতিতেই ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ছে। চা বাগানগুলির উপর সঠিক ভাবে নজরদারি চালাচ্ছে না স্বাস্থ্য দফতর। সে কারণে ওদলাবাড়ি, বাগরাকোট এলাকায় ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে।’’