সবংয়ে কংগ্রেসের অবস্থান

কলেজ থেকে পুলিশ পাহারা তোলার দাবি

সবংয়ে কৃষ্ণপ্রসাদ জানা খুনের ঘটনায় টিএমসিপিকে আড়াল করছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকেই এই অভিযোগে সরব বিরোধীরা। সোমবার ছাত্র হত্যার ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে সবংয়ের সজনীকান্ত মহাবিদ্যালয়ের সামনে লাগাতার অবস্থানে বসেছে কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা। মঙ্গলবার অবস্থান দ্বিতীয়দিনে পড়ল। এ দিন কংগ্রেসের অবস্থান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র, নেপাল মাহাতো, যুব কংগ্রেস সভাপতি অরিন্দম ভট্টাচার্য প্রমুখ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:২৪
Share:

সবং কলেজের সামনে কংগ্রেসের অবস্থান মঞ্চে মানস ভুঁইয়া-সহ দলীয় নেতৃত্ব। মঙ্গলবার। — নিজস্ব চিত্র।

সবংয়ে কৃষ্ণপ্রসাদ জানা খুনের ঘটনায় টিএমসিপিকে আড়াল করছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকেই এই অভিযোগে সরব বিরোধীরা। সোমবার ছাত্র হত্যার ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে সবংয়ের সজনীকান্ত মহাবিদ্যালয়ের সামনে লাগাতার অবস্থানে বসেছে কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা। মঙ্গলবার অবস্থান দ্বিতীয়দিনে পড়ল। এ দিন কংগ্রেসের অবস্থান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র, নেপাল মাহাতো, যুব কংগ্রেস সভাপতি অরিন্দম ভট্টাচার্য প্রমুখ। ছিলেন স্থানীয় কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়াও।
এ দিন অবস্থান মঞ্চ থেকে রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ দাবি করেন মানসবাবু। তিনি বলেন, “সুব্রত মুখোপাধ্যায় প্রতিবাদী নেতা। একসময়ে ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে ছাত্র নির্যাতনের বিরুদ্ধে তিনি গর্জে উঠেছেন। সবং কলেজের ছাত্র হত্যার ঘটনায় কেন তিনি নীরব? তাঁকে বলব, একটু প্রতিবাদী হয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়ে মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে সংযত করতে বলুন।” পুলিশ সুপারকে বিঁধে মানসবাবুর কটাক্ষ, “যৌথবাহিনীর দয়ায় আপনি নেতাগিরি করছেন। হার্মাদ তৈরি করে সিপিএম সে দিন ভুল রাজনীতি করেছিল। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য যখন মুখ্যমন্ত্রী তখন আজকের মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন ক্ষমতায় ফিরলে তিনি যৌথবাহিনী তুলে নেবেন। কিন্তু তা এখনও হয়নি।”
সোমবার অবস্থান মঞ্চ থেকে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সুর চড়িয়েছিলেন কংগ্রেস নেতারা। মঙ্গলবারও পুলিশের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানায় কংগ্রেস। কংগ্রেসের অবস্থান মঞ্চের বিপরীতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। কলেজের গেটের ভিতরে রয়েছে পুলিশ পিকেট। মানসবাবু প্রশ্ন তোলেন, কলেজ গেটের ভিতরে কার অনুমতিতে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। কলেজ চত্বর থেকে পুলিশ বের করার দাবিতে পড়ুয়াদের সই করা একটি লিখিত দাবিপত্রও কলেজ অধ্যক্ষের কাছে জমা দেওয়া হয় বলে দাবি কংগ্রেসের। এ বিষয়ে অবশ্য কলেজের অধ্যক্ষ কানাইলাল পড়িয়ার কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

Advertisement

তৃণমূলের অভিযোগ, অবস্থান মঞ্চে মাইকের ব্যবহারের দরুন কলেজের শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। এ দিন স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদ সদস্য অমূল্য মাইতি মহকুমাশাসকের কাছে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে লিখিতভাবে আবেদন করেন। অমূল্যবাবু বলেন, “মানস ভুঁইয়ারা ছাত্র মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করছেন। তাই অবস্থানের নামে তারস্বরে মাইক বাজিয়ে বক্তৃতা দিচ্ছেন। কলেজ চলাকালীন মাইকের আওয়াজে ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস করতে পারছেন না। আমি মহকুমাশাসকের কাছে এর প্রতিকার চেয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আবেদন করেছি।” খড়্গপুরের মহকুমাশাসক সঞ্জয় ভট্টাচার্যেরও বক্তব্য, “কলেজের সামনে এ ভাবে মাইক বাজানো হলে আমি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।”

এ দিন নতুন করে জেরার জন্য ১৩জনকে নোটিস পাঠিয়েছে পুলিশ। আগেই অবশ্য এই ১৩জনকে নোটিস পাঠিয়ে প্রথমে মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়। পরে তাঁদের ডেকে পাঠানো হয় সবং থানায়। ফের নতুন করে ১৩জনকে ডেকে পাঠানো হলেও তাঁদের মধ্যে কেউ এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সবং থানায় যাননি বলে পুলিশ সূত্রে দাবি। ব্লক কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক আবু কালাম বক্স বলেন, “পুলিশের কাছে জেরার জন্য গেলে গ্রেফতার করা হচ্ছে। সৌমেন গঙ্গোপাধ্যায়দের মতো নিরাপরাধদের গ্রেফতার করে মানসিক অত্যাচার চলছে। পুলিশের অত্যাচারে আশঙ্কায় আমাদের ছেলেরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। আমরাও জানিনা তাঁরা কোথায় রয়েছে।”

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement