প্রতীকী ছবি
রাজধানী দিল্লি দেশের মধ্যে দূষণে সব থেকে ‘এগিয়ে’ আছে। কম যায় না কলকাতাও। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র সাম্প্রতিকতম রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে পরিবেশপ্রেমী সংস্থা গ্রিনপিস দেখিয়েছে, দিল্লিতে ২০২০ সালে বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্ম কণার (পার্টিকুলেট ম্যাটার বা পিএম ২.৫) মাত্রা হু-র নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে প্রায় ১৭ গুণ বেশি ছিল। কলকাতায় সেই মাত্রা ছিল প্রায় সাড়ে ন’গুণ এবং মুম্বইয়ে প্রায় আট গুণ। হায়দরাবাদ, আমেদাবাদের মতো শহরেও দূষণকণা ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্ধারিত মাত্রার তুলনায় আট গুণ বা তারও বেশি।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে বায়ুদূষণ নিয়ে হু-র প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, এই অঞ্চলের দূষণের নিরিখে ভারতের স্থান তৃতীয়। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পরেই। ওই তালিকায় দেখাচ্ছে, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশেও দূষণ ভারতের থেকে অনেক কম।
এই দূষণের নিরিখেই ভারতে বায়ুদূষণঘটিত রোগগুলির কথাও ফের সামনে আসছে। পরিবেশবিদ ও জনস্বাস্থ্য বিজ্ঞানীদের সতর্কবার্তা, দূষণ কমাতে অবিলম্বে তৎপর না-হলে শ্বাসরোগ, ফুসফুসের ক্যানসারের মতো রোগ আরও বিপজ্জনক আকার নিতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রিপোর্ট প্রকাশের পাশাপাশি দূষণে রাশ টানার জন্য বেশ কিছু নির্দেশিকাও দিয়েছে। তাদের পরামর্শ, বাতাসে ভাসমান কণা (পিএম), ওজ়োন, নাইট্রোজেন যৌগ, সালফার যৌগ ইত্যাদি কমানোর উপরেই বেশি জোর দেওয়া উচিত। অন্যথায় বায়ুদূষণঘটিত রোগব্যাধির প্রকোপ বহু গুণ বেড়ে যেতে পারে।
কানপুর আইআইটি-র অধ্যাপক এবং ন্যাশনাল ক্লিন এয়ার প্রোগ্রামের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য সচ্চিদানন্দ ত্রিপাঠীর মতে, এ দেশের অনেক শহরেরই দূষণের পরিমাণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেঁধে দেওয়া মাত্রার নীচে নামবে না। এই পরিস্থিতিতে দেশের বায়ুদূষণ রোধের নিয়মকানুন আরও কঠোর করাই একমাত্র পথ। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ইমপ্লিমেনটেশন রিসার্চ অব নন-কমিউনিকেবল ডিজ়িজ়েস-এর অধিকর্তা অরুণ শর্মা মনে করেন, হু নতুন মাত্রা নির্ধারণ করে বায়ুদূষণ রোধের গুরুত্ব বাড়িয়েছে। তবে ভারতের মতো দেশের ক্ষেত্রে সেই নির্ধারিত মাত্রা মেনে চলা খুবই কঠিন।