আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ। — ফাইল চিত্র।
সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার পরবর্তী শুনানির দিনক্ষণ ঘোষণা করা হল। আগামী ১৪ অক্টোবর এই মামলার ফের শুনানি সুপ্রিম কোর্টে। ৯ অক্টোবর দুর্গাপুজোর ষষ্ঠী। ১২ অক্টোবর দশমী। তার দু’দিন পরে ১৪ অক্টোবর, সোমবার সুপ্রিম কোর্টে রয়েছে আরজি কর মামলার শুনানি।
সোমবার বিকেল ৪টের কিছু পরে সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে আরজি কর মামলা। এই ঘটনায় তদন্ত প্রক্রিয়া কত দূর এগোল তা সিবিআইয়ের কাছে জানতে চায় সুপ্রিম কোর্ট। তাদের থেকে ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ দেখতে চান সু্প্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। কারা তদন্তের অধীনে রয়েছেন সেই নামের তালিকাও আদালতে জমা দেওয়ার জন্য সিবিআইকে নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি।
রাজ্যের আইনজীবী জানান, পাঁচ জনকে ইতিমধ্যে নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করা হয়েছে। কোন পাঁচ জনকে নিলম্বিত করা হয়েছে, সেই নামের তালিকাও জানতে চান প্রধান বিচারপতি। রাজ্যের তরফেও আদালতে আশ্বস্ত করা হয়, তদন্তকারী সংস্থা নামের তালিকা দিলে পদক্ষেপ করা হবে। রাজ্যের আইনজীবী জানান, কেউ যত প্রভাবশালীই হোন, সিবিআই তাঁদের নামের তালিকা দিলে পদক্ষেপ করা হবে।
রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলিতে সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ কত দূর এগোল, সেই প্রশ্নও করেছেন প্রধান বিচারপতি। এ নিয়ে রাজ্যের জবাব পাওয়ার পরে সরকারি হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তা এবং পরিকাঠামো সংক্রান্ত কাজ শেষ করার সময়সীমাও বেঁধে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। আদালত জানিয়ে দেয়, আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে হাসপাতালগুলিতে সিসি ক্যামেরা বসানো-সহ সমস্ত কাজ শেষ করতে হবে।
জুনিয়র ডাক্তারেরা কেন সব পরিষেবার কাজ করছেন না, সেই প্রশ্নও তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যের তরফে জানানো হয়, জুনিয়র ডাক্তারেরা শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবা দিচ্ছেন। বহির্বিভাগ ও অন্য ক্ষেত্রে পরিষেবা দিচ্ছেন না তাঁরা। যদিও তাতে আপত্তি জানান জুনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ। তিনি দাবি করেন, প্রয়োজনীয় পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। তখন প্রধান বিচারপতি জানতে চান, কেন শুধু প্রয়োজনীয় পরিষেবা কথা বলা হচ্ছে? তা হলে কি সকল চিকিৎসক সব ডিউটি করছেন না? ইন্দিরা জানান, জুনিয়র ডাক্তারেরা জরুরি পরিষেবায় রয়েছেন। জরুরি পরিষেবার মধ্যে ওপিডি ও আইপিডি— উভয়ই পড়ে। এর পরেই প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও অন্য ক্ষেত্রগুলি-সহ সমস্ত প্রয়োজনীয় পরিষেবা দেবেন জুনিয়র ডাক্তারেরা।
এই মামলায় এখনও পর্যন্ত ৪২টি পক্ষ রয়েছে। তাদের হয়ে দাঁড়িয়েছেন ২০০-র বেশি আইনজীবী। তার মধ্যে রয়েছে অন্যতম প্রধান ন’টি পক্ষ। পুজো শেষে আবার এই মামলা শুনবে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর আরজি কর মামলার শুনানি হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। পরবর্তী শুনানির দিন ছিল ২৭ তারিখ। ওই দিন রাজ্যের আইনজীবীর সমস্যা থাকায় শুনানি পিছিয়ে সোমবার ধার্য করা হয়। তার আগেও অবশ্য এক বার ওই মামলার শুনানি পিছিয়ে গিয়েছিল। গত ৫ সেপ্টেম্বর হওয়ার কথা থাকলেও প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় না থাকায় শুনানি হয়নি। পরিবর্তে ১৭ তারিখ শুনানি হয়।