রেলকর্মীদের জন্য বিশেষ ট্রেনে উঠতে দেওয়ার দাবিতে অবরোধ। সোমবার বৈদ্যবাটিতে। ছবি: কেদারনাথ ঘোষ
লোকাল ট্রেন চালুর দাবিতে সোমবার হুগলির বিভিন্ন স্টেশনে অবরোধ হল। বৈদ্যবাটিতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রায় ১২ ঘণ্টা অবরোধ চলে। সেখানে জিটি রোডও অবরোধ করায় যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। চন্দননগরের সিপি হুমায়ুন কবীর জানান, অবরোধকারীরা অনড় থাকায় অবরোধ তোলার ক্ষেত্রে ঝুঁকি নেওয়া হয়নি।
বেশ কিছু দিন ধরে রেলকর্মীদের বিশেষ ট্রেনে যাতায়াত করছিলেন এক শ্রেণির নিত্যযাত্রী। রেল পুলিশ বাধা দিলে দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল হয়। তার জেরে হুগলির বিভিন্ন স্টেশনে সম্প্রতি অবরোধ হয়। গত শুক্রবার হাওড়ায় রেল পুলিশের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তোলেন যাত্রীরা। তাতে আগুনে ঘি পড়ে।
সোমবার সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে হাওড়াগামী ডাউন বর্ধমান বিশেষ লোকাল বৈদ্যবাটি স্টেশনে পৌঁছতেই কয়েকশো মানুষ অবরোধ শুরু করেন। তাঁদের কেউ পরিচারিকা, কেউ মিস্ত্রি, কেউ মুটে অথবা দোকানের কর্মী। লাইনে গাছের গুঁড়ি, পড়ে থাকা রেলের লাইন ফেলে দেওয়া হয়। স্টেশন সংলগ্ন রেলগেটে বিক্ষোভকারীরা লাঠি-বাঁশ হাতে বসে পড়েন। তাতে জিটি রোডও অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। শেওড়াফুলি, মানকুণ্ডু, রিষড়াতেও অবরোধ হয়। রিষড়ায় জিটি রোডও অবরোধ করা হয়।
কমিশনারেট, জিআরপি, আরপিএফের আধিকারিকেরা বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। জনতাকে বোঝানোর চেষ্টা হলেও লাভ হয়নি। বিক্ষোভকারীরা জানিয়ে দেন, ট্রেন চালুর ঘোষণা না-হওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে। পরিস্থিতির জেরে পথে বেরোনো বহু মানুষ নাকাল হন। সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত অনেক যাত্রীকে ট্রেনেই বসে থাকতে দেখা যায়।
বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, ট্রেন বন্ধ থাকায় তাঁরা বিপাকে। সড়কপথে যাতায়াতে প্রচুর খরচ হচ্ছে। তা ছাড়া, বাসে-লঞ্চে বাদুড়ঝোলা হয়ে যাতায়াত চলছে। সেখানে করোনা সংক্রমণ না-হলে, ট্রেনে কেন হবে? এক মহিলাকে চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, ‘‘দিনে দু’শো টাকা রোজগার করি। ১০০ টাকা যাতায়াতে চলে গেলে সংসার চলবে কী দিয়ে? করোনায় মরি তা-ও সই, খেতে না পেয়ে মরতে পারব না।’’ অবরোধকারীদের তরফে আবেদন জানানো হয়, বিশেষ ট্রেনে উঠলে বাধা দেওয়া চলবে না। কমিশনারেটের আধিকারিকরা জানান, দরখাস্তটি রেল কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। ওই আশ্বাসে রাত ৮টা নাগাদ অবরোধ ওঠে।