ক্ষতিগ্রস্ত সব বাড়ি মেরামতের জন্য ২০ হাজার টাকা করে অর্থসাহায্য ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।—ছবি পিটিআই।
এক দিকে ক্ষতির হিসেব কষা, অন্য দিকে ক্ষত মেরামত— বুধবার নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠকে দ্বিমুখী এই নীতিতে সব জেলা প্রশাসনকে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিল রাজ্য। সরকারি হিসেবে আমপানে ৬ কোটি মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত। পরোক্ষ ক্ষতি হয়েছে ১০ কোটি মানুষের। এ দিন ক্ষতিগ্রস্ত সব বাড়ি মেরামতের জন্য ২০ হাজার টাকা করে অর্থসাহায্য ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ক্ষতিগ্রস্ত পানের বরজগুলির মালিককেও পাঁচ হাজার টাকা করে অর্থ সাহায্য দেবে রাজ্য। কৃষিতে মোট ক্ষতির রিপোর্ট তিন দিনে তৈরি করতে বলা হয়েছে।
সরকারের প্রাথমিক রিপোর্টে প্রায় ১৬০ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুই ২৪ পরগনার জেলা প্রশাসনকে জরুরি ভিত্তিতে সেই বাঁধ মেরামতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ৬ জুনের মধ্যে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলির যথাসম্ভব মেরামত করে ফেলতে চাইছে রাজ্য। ভেঙে যাওয়া গাছের গুঁড়িকে এ কাজে লাগানোর কথা ভাবা হচ্ছে। পুনর্গঠনের কাজ তদারকিতে উত্তর ২৪ পরগনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পূর্তসচিব নবীন প্রকাশকে। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন জানিয়েছেন, ৯০% বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া গিয়েছে। কিন্তু বহু গ্রাম এখনও জলমগ্ন থাকায় সেখানে বিদ্যুতের খুঁটি পোঁতার কাজে সমস্যা হচ্ছে।
প্রাথমিক তথ্যে অন্তত ১০ লক্ষ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে সরকারের দাবি। মেরামতের জন্য প্রাথমিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পরে ক্রমে তাদের আবাস যোজনার আওতায় নিয়ে আসা হবে। এর জন্য দু’টি টাস্কফোর্স তৈরি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যভিত্তিক টাস্কফোর্সের মাথায় থাকছেন মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ। জেলাভিত্তিক টাস্কফোর্সগুলিতে জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা পরিষদ সভাধিপতি এবং স্থানীয় বিধায়ক থাকবেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এখন একটা পয়সার অনেক দাম আমাদের কাছে। প্রতিদিন টাস্কফোর্স নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে কাজকর্মের তদারকি করবে।’’
আরও পড়ুন: শ্রমিক ট্রেন নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ মমতার
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় টিউবওয়েল লাগানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১০০ কোটি টাকা। সামগ্রিক ভাবে পরিকাঠামো মেরামতে জোর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ কাজে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের শ্রমিকদের কাজে লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। প্রয়োজনে পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজে লাগানো যেতে পারে। যেখানে রেশন দোকানগুলির ক্ষতি হয়েছে, সেখানে বিকল্প জায়গা থেকে অথবা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির মাধ্যমে রেশন বিলির ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা যোজনার প্রায় ৬ কোটি উপভোক্তাকে ডাল দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, কেন্দ্রকে অনুরোধ করা হোক, যাতে তারা এই অবস্থায় সকল রেশন উপভোক্তার জন্য তা বরাদ্দ করে।
আরও পড়ুন: মুরগির খামারে মাথা গুঁজেছেন সায়রা