মেঘে ঢাকা কলকাতার আকাশ। ছবি: রয়টার্স
ঘূর্ণিঝড় আমপানের জেরে উপকূলবর্তী তিন জেলাকে ঘিরে বিপর্যয় মোকাবিলার পরিকল্পনা করছে রাজ্য প্রশাসন। দুই ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উপকূলবর্তী এলাকা থেকে প্রায় ৩ লক্ষ মানুষকে সরিয়ে সাইক্লোন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে সেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে। মজুত করা হয়েছে পর্যাপ্ত খাদ্যসামগ্রী। মোতায়েন রয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। এ ছাড়া কলকাতার জন্য রয়েছে আলাদা পরিকল্পনা। নবান্নে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
উপকূলে আছড়ে পড়ার সময় আমপানের গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৫০-১৮০ কিলোমিটার। সঙ্গে থাকবে প্রবল জলোচ্ছ্বাস। উপকূলবর্তী দুই ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা প্রশাসনকে চূড়ান্ত সতর্ক থাকতে বলেছে নবান্ন। ইতিমধ্যেই সমুদ্রে যাওয়া এ রাজ্যের সমস্ত মৎস্যজীবী ফিরে এসেছেন। পর্যটকও নেই। উপকূল এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নিরাপদে সাইক্লোন সেন্টারগুলিতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আবহবিদদের সতর্কবার্তা অনুযায়ী, তিন জেলার মধ্যেও সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়তে চলেছে সুন্দরবন এলাকায়। তাই ওই এলাকার উপর বিশেষ নজরদারি রয়েছে প্রশাসনের। এ ছাড়া নবান্নে খোলা হয়েছে কন্ট্রোলরুম। টোল ফ্রি নম্বর ১০৭০। এ ছাড়া অন্য দু’টি নম্বর ২২১৪-৩৫২৬ ও ২২১৪-১৯৯৫।
বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, যেহেতু সুন্দরবনে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে রাজ্য সরকার। বাসিন্দাদের সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসা হয়েছে।
পরিস্থিতির মোকাবিলায় ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ মিলিয়ে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) মোট ৪০টি দল মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে রাজ্যে রয়েছে ২০টি দল। ১৯টি উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে নজরদারি চালাচ্ছে। এ ছাড়া রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও সজাগ রয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রবল ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা ৩ জেলায়, কলকাতাতেও বিশেষ সতর্কতা
আরও পড়ুন: বাতাসের তীব্রতা মাপতে ব্যর্থ যন্ত্র, গত শতকের বিধ্বংসীতম ঘূর্ণিঝড়ে ছিন্নভিন্ন হয় ওড়িশা
কলকাতাতেও সুপার সাইক্লোনের ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। সেই অনুযায়ী আলাদা করে পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। আমপানের মোকাবিলায় সব থানার আধিকারিকদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে বৈঠক করেছেন কলকাতার নগরপাল অনুজ শর্মা। সব থানাকে সতর্ক করা হয়েছে। ঝড়ের সময় পুলিশ কর্মীদের বাইরে বেরোতে মানা করা হয়েছে। এ ছাড়া সমস্ত থানায় শুকনো খাবার ও পানীয় জল মজুত করার নির্দেশ দিয়েছেন নগরপাল। গঙ্গায় নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রিভার ট্রাফিক কন্ট্রোল বিভাগের কর্মীরা।
অন্য দিকে কলকাতা পুরসভাতেও যুদ্ধকালীন তৎপরতা। প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, প্রবল বৃষ্টি হলেও যাতে কলকাতা জলমগ্ন না হয়ে পড়ে তার জন্য সব পাম্পিং স্টেশনগুলিকে সচল রাখতে বলা হয়েছে। ঝড়ে প্রচুর গাছ উপড়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সে বিষয়েও সজাগ রয়েছেন পুরকর্মীরা।