Cyclone Amphan

চাষে ধাক্কা বহু কোটির, দাবি উঠছে ক্ষতিপূরণের

সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুরের মতো জেলাগুলি। উত্তর ২৪ পরগনায় ১ লক্ষ ৯ হাজার ৬৩৯ হেক্টর কৃষিজমি সম্পূর্ণ জলের তলায় চলে গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২০ ০৩:৩৭
Share:

ছবি পিটিআই।

লকডাউনে থমকে থাকা কৃষি অর্থনীতির চাকা ঘোরাতে সবে সরকারি ছাড় মিলেছিল। তোলা হচ্ছিল বোরো ধান, ছন্দ ফিরছিল আনাজ চাষে। সব লন্ডভন্ড করেছে আমপান। দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে ধান, আনাজ, পাট, তিল, পান, ডালশস্য— সব চাষই বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছে।

Advertisement

সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুরের মতো জেলাগুলি। উত্তর ২৪ পরগনায় ১ লক্ষ ৯ হাজার ৬৩৯ হেক্টর কৃষিজমি সম্পূর্ণ জলের তলায় চলে গিয়েছে। মরসুমি আনাজ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ক্ষতি হয়েছে পাটেরও। তবে প্রায় ৭০ শতাংশ ধান কেটে নেওয়া হয়েছিল। বাকি ৩০ শতাংশ মাঠেই নষ্ট হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে আম, কাঁঠালের মতো ফলের। তছনছ ফুলচাষ। ১৬ হাজার হেক্টর মিষ্টি ও নোনা জলের মাছচাষ, ১২০০ মেট্রিক টন ভেড়ির চিংড়ি মাছ নষ্ট হয়েছে। চাষে ধ্বংসের ছবি দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও। বোরো ধান অনেকটাই কেটে ফেলায় ক্ষতি তুলনায় কম। গোসাবা, সাগর, কাকদ্বীপ-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় নদীবাঁধ ভেঙে নোনা জল ঢুকে ফসল নষ্ট হয়েছে। জেলায় কৃষিতে প্রায় ২৫০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

উপকূলের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে ৩,২০০ হেক্টরে পান, ১৩,০৫০ হেক্টর বাদামে, ১,৯৮০ হেক্টরে তিল, ৪৯২০ হেক্টরে আনাজ এবং ১,০৫০ হেক্টরে ফুল চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে বোরো ধান, আনাজ, তিল প্রভৃতি ক্ষেত্রে ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ ৩৯৯ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা। আর ফুল, পান প্রভৃতি ক্ষেত্রে ক্ষতির অঙ্কটা ৮ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা। সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে আনাজেরই। হুগলিতে আনাজ, ডালশস্য, বাদাম, তিল, বোরো মিলিয়ে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ৮৫৭ হেক্টর আনাজ চাষের মধ্যে ৮১০ হেক্টরের আর অস্তিত্ব নেই। হাওড়ায় চাষে ক্ষতির অঙ্ক প্রায় ৮২ কোটি টাকা।

Advertisement

আরও পড়ুন: আয়লার থেকে আমপান, বারে বারে রাস্তাই আশ্রয় হয় রশিদ গাজির

নদিয়ায় প্রায় দেড় লক্ষ হেক্টরে ফসল নষ্ট হয়েছে। মুর্শিদাবাদে ধান-পাট, তিল, আনাজ-সহ সহ ধরনের বাগিচা ফসল ক্ষতির মুখে পড়েছে। ১ লক্ষ ৭৫ হাজার ৩০০ হেক্টরে ক্ষতির পরিমাণ ১ হাজার ১৪০ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। আর রাজ্যের ‘ধান্য ভাণ্ডার’ পূর্ব বর্ধমানে প্রায় ৪২ হাজার ৭০ হেক্টর জমির বোরো ধানে ক্ষতি হয়েছে। টাকার অঙ্কে পরিমাণ প্রায় ৩৬০ কোটি। লোকসানের মুখে ক্ষতিপূরণের দাবি তুলছেন চাষিরা। নদিয়ার তেহট্টের কলা চাষি অনুপ মণ্ডল, অরিজিৎ মণ্ডল, কল্যাণীর চর জাজিরার চাষি রবি মাহাতোরা বলছেন, ‘‘চার দিন পরেও সরকারি সাহায্যের ঘোষণা হয়নি। ক্ষতিপূরণ না পেলে কী করব?’’ মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘‘ রাজ্যের সব জায়গা থেকে ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট পাইনি। ক্ষতিপূরণের বিষষয়টি দেখা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement