প্রতীকী ছবি।
রাতের অন্ধকারে সুন্দরবনের রামগঙ্গা নদীতে দ্রুত গতিতে পালানোর চেষ্টা করছে একটি ট্রলার। পিছনে তাড়া করছে দু’টি স্পিডবোট। তার আরোহী শুল্ক অফিসারেরা গুলি চালাচ্ছেন সমানে। দীর্ঘ ১২ কিলোমিটার তাড়া করার পরে ধরা পড়ল ট্রলার।
সিনেমা নয়। বুধবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বঙ্গোপসাগরের কাছে, নামখানায় নদীতে। আটক ট্রলারে পাওয়া গিয়েছে প্রায় তিন কোটি টাকার জামাকাপড়। সেগুলো বাংলাদেশে পাচারের চেষ্টা চলছিল বলে জানান শুল্ক দফতরের প্রিভেন্টিভ শাখার অফিসারেরা। তবে পাচারকারীদের কাউকে ধরা যায়নি।
শুল্ক দফতর সূত্রের খবর, তাদের খবর অনুযায়ী ওই ট্রলারে চার বাংলাদেশি-সহ মোট সাত জন থাকার কথা ছিল। তাড়া খেয়ে রামগঙ্গা নদীর ডান দিকের পাড়ের কাছে ট্রলার থামিয়ে সেই সাত জনই নেমে জঙ্গলের মধ্যে পালিয়ে যায়। রাতেই ওই ট্রলারকে টানতে টানতে কলকাতার পথ ধরে শুল্ক দফতরের হাইস্পিড বোট। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তারা মহানগরীতে পৌঁছেছে। শুল্ক অফিসারেরা জানান, ট্রলারে আরও কিছু চোরাই পণ্য পাওয়া যেতে পারে। ট্রলার-মালিকের খোঁজে বৃহস্পতিবার রাতেও অভিযান চালানো হয়।
শুল্ক দফতর জানিয়েছে, মাছ ধরার ট্রলারে সুন্দরবনের জঙ্গল-ঘেরা খাঁড়ি দিয়ে নানা ধরনের পণ্য বাংলাদেশে পাচার হচ্ছে। কয়েক দিন আগেই ওই পথে কাপড় পাচারের খবর আসে শুল্ককর্তাদের কাছে। নির্দিষ্ট ভাবে একটি ট্রলারের খবর পেয়ে তার গতিবিধির উপরে নজর রাখতে শুরু করেন অফিসারেরা। বুধবার রাতে দু’টি স্পিডবোটে সার্চলাইট, বাইনোকুলার নিয়ে সশস্ত্র অভিযান শুরু হয়। রাত ১০টা নাগাদ নামখানা থেকে রওনা দিয়ে দু’ঘণ্টা পরে বনশ্যামনগর এলাকায় নদীর উপরে আলো নিভিয়ে চুপ করে অপেক্ষা করতে থাকেন তাঁরা। সেখানে দু’ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরে নির্দিষ্ট ট্রলারটির দেখা মেলে। সেটি কাছাকাছি আসতেই শুল্ক অফিসারেরা সার্চলাইট ফেলে তাকে দাঁড়াতে বলে।
শুল্ক অফিসারেরা জানান, বিপদ বুঝে গতি বাড়িয়ে বাংলাদেশের দিকে পালানোর চেষ্টা করে ট্রলারটি। শেষে সেটি থামিয়ে আরোহীরা পালায়। তার আগে ট্রলারে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। সেই আগুন নিভিয়ে ট্রলারটিকে টেনে নিয়ে আসা হয়েছে।