নবান্নে মুখ্যসচিব, ডিজি এবং স্বাস্থ্যসচিব সাংবাদিক বৈঠক। ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানি ছিল। সেই শুনানিতে দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ, আন্দোলনরত চিকিৎসকদের অবিলম্বে কাজে যোগ দেওয়ার কথা বলে। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে যোগ দিতে হবে। তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ হবে না, আমরা তো বলেছি। মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে কাজে যোগ দিতে হবে। তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না রাজ্য।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘এর পরেও যদি কোনও চিকিৎসক কাজে যোগ না দেন, তবে তাঁর বিরুদ্ধে রাজ্য কোনও পদক্ষেপ করলে আমরা বাধা দিতে পারব না।’’ পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট পর্যবেক্ষণে এ-ও জানায়, আন্দোলনরত চিকিৎসকদের প্রয়োজনীয় সুযোগসুবিধা জেনে, তবেই পদক্ষেপ করতে হবে রাজ্যকে।
তার পর মুখ্যমন্ত্রীও জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার অনুরোধ করেন। সোমবার তিনি বলেন, ‘‘আমি সকলকে অনুরোধ করব কাজে যোগ দিন। যদি আপনারা (আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তার) মনে করেন কিছু বলার আছে, তবে সব সময় স্বাগত। আপনারা ৫-১০ জনের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে আসুন, আমরা কথা বলতে পারি।” ওই বৈঠকে স্বাস্থ্যসচিবকে ১০০ কোটি টাকা দেওয়ার কথা বলেছিলেন মমতা। সোমবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে সেই টাকা বরাদ্দের কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যসচিব।
হাসপাতালের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান মুখ্যসচিব। তিনি আরও জানান, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘হাসপাতালগুলির নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থাও আছে। সেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে। প্রয়োজনে নতুন নিরাপত্তাকর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। আমরা চাইছি সামগ্রিক চেষ্টার মাধ্যমে যা কাজ করার, তা আগামী দিনে দ্রুততার সঙ্গে করব।’’
মুখ্যসচিব আরও বলেন, ‘‘আমাদের পুরো দল এই কাজের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। সকলের সঙ্গে আলোচনা করে এই কাজগুলো করা হবে। জুনিয়র ডাক্তারদের অনুরোধ আপনারা কাজে ফিরুন। এত দিন আপনারা যা পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছিলেন তা শুরু করুন।’’ স্বাস্থ্যসচিবও একই কথা বলেন সোমবারের সাংবাদিক বৈঠকে।
মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট তার পর্যবেক্ষণে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার কথা বলেছে। আমরা সে কথা মাথায় রেখেই আমরা ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য ভবনের মাধ্যমে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছি। সিসিটিভি, আলো, রেস্টরুম, ওয়াশরুম ইত্যাদি বিভিন্ন রকম পরিষেবার জন্য খরচ করা হবে। সাত দিনের মধ্যে কাজ শুরু করে দেব।’’
মনোজ বলেন, ‘‘যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁদের প্রতি আমাদের সহানুভূতি রয়েছে। আমরা চাইছি, বন্ধু বা ভাইবোন হিসাবে ওঁরা যেন আবার কাজ শুরু করেন।’’
সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে সুপ্রিম কোর্ট এবং মুখ্যমন্ত্রীর কথা উল্লেখ করে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার আহ্বান জানান মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের। তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট সকলকে কাজে ফুরতে বলেছে। এ-ও বলেছে, কাজে ফিরলে সকলে উপকৃত হবেন। কাল পাঁচটার মধ্যে যাতে জুনিয়র ডাক্তারেরা কাজে ফেরেন তা নিয়ে আজ মুখ্যমন্ত্রীও অনুরোধ করছেন। আমরা একই কথা বলছি।’’
সোমবার নবান্ন সাংবাদিক বৈঠক করছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম এবং রাজ্যপুলিশের ভারপ্রাপ্ত ডিজি রাজীব কুমার। এই নবান্নের সভাঘরেই সোমবার প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে একাধিক বিষয় তুলে ধরেছেন তিনি।