বৃষ্টিস্নাত: বৃহস্পতিবার ময়দানে। ছবি: সুমন বল্লভ
বর্ষা কার্যত রাজ্যের দোরগোড়ায় এসে পৌঁছেছে। মৌসম ভবন বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ওড়িশার একাংশে এ দিন বর্ষা ঢুকেছে। আজ, শুক্রবার বা কাল, শনিবারের মধ্যে বর্ষা এ রাজ্যে ঢুকতে পারে বলে আবহবিদদের পূর্বাভাস। বর্ষার আগমন-বার্তা গরমের হাত থেকে নিষ্কৃতি নিয়ে স্বস্তির আভাস দিলেও জনস্বাস্থ্য-বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবিদদের অনেকেই বলছেন, বর্ষার আগমনের সঙ্গে সঙ্গে নানান জলবাহিত ও পরজীবিবাহিত রোগের আশঙ্কাও বাড়ছে। তাই গরমের হাত থেকে স্বস্তি মিললেও রোগজ্বালা কতটা নাকাল করবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তাও তৈরি হচ্ছে।
বর্ষা পুরোপুরি না-ঢুকলেও এ দিন থেকেই রাজ্যে প্রাক-বর্ষা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ফলে বিভিন্ন এলাকায় দফায়-দফায় বৃষ্টি হয়েছে। খাস শহর এলাকায় সে ভাবে প্রভাব না-পড়লেও আমপান বিধ্বস্ত এলাকায় হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টির প্রভাবও বেশি হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় আমপানের দাপটে উপকূলীয় এলাকাগুলিতে বাড়িঘর শুধু ভাঙেনি, শৌচাগার ভেঙেছে এবং পানীয় জলের নলকূপও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহু এলাকায় বাঁধ পুরোপুরি সারাই না হওয়ায় এখনও জল জমে আছে। এর মধ্যে বর্ষা এলে জলবাহিত রোগের প্রকোপ দেখা দিতে পারে। পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য–বিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী জানান, ডায়েরিয়ার মতো অসুখের প্রকোপ বাড়তে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্টে এই অসুখকে পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের ক্ষেত্রে মারাত্মক বলা হয়েছে এবং এতে মৃত্যুর হার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। চিকিৎসক সংগঠন সার্ভিস ডক্টর্স ফোরামের সম্পাদক সজল বিশ্বাস জানান, ইতিমধ্যেই বিভিন্ন এলাকায় আন্ত্রিকের প্রকোপ দেখা দিয়েছে।
শহরের ক্ষেত্রে সে ভাবে শৌচাগার ও পানীয় জলের উৎসে প্রভাব না-পড়লেও বৃষ্টির জল জমে মশার বংশবিস্তারে সহায়ক হতে পারে। চিকিৎসক সংগঠন এবং জনস্বাস্থ্য-বিশেষজ্ঞেরা ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার মতো রোগের প্রকোপ বৃদ্ধির আশঙ্কাও করছেন। স্বাতীদেবী জানান, শহর এবং শহরতলি এলাকায় ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ে রয়েছে। সেই ভাঙা ডাল বা গুঁড়ির ফোকরে জল জমে থাকতে পারে। সেখানেই মশা বংশবিস্তার করতে পারে।