প্রতীকী ছবি।
দক্ষিণবঙ্গে আলুর দাম চড়া। উত্তরে কিন্তু এখনও সাধ্যের মধ্যে রয়েছে। তবে কত দিন তা থাকবে, তাই নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কারণ, বাড়তি ফলন এবং হিমঘরের অভাব। ফলে বহু চাষিই আলু বস্তায় ভরে বাড়িতে বা গুদামে রাখার ব্যবস্থা করেছিলেন। সম্প্রতি টানা কয়েক দিন বৃষ্টি এবং তার মধ্যে চড়া রোদ ও গুমোট গরমের ফলে সেই আলু পচতে শুরু করেছে। এর ফলে আলু উৎপাদনে সামনের সারির জেলা জলপাইগুড়িতেও জোগান কমতে পারে।
একই পরিস্থিতি উত্তরের অন্য জেলাতেও। সম্প্রতি মালদহেও চাষিরা এই একই কারণে ক্ষোভ জানিয়েছেন। আলু চাষিদের বেশির ভাগেরই বক্তব্য, এখন জলপাইগুড়ির খুচরো বাজারে ১৫-২০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে। এই পরিস্থিতি অনেক দিন ধরেই। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বেশির ভাগ বাজারে এই দর প্রায় ৩০ টাকা প্রতি কেজি। উত্তরবঙ্গের চাষিদের একাংশের দাবি, তাঁদের জেলাতেও পাইকারি বাজারে দাম বাড়তে শুরু করেছে আলুর। তাঁদের কথায়, এত দিন পঞ্চাশ কেজির একটি বস্তার দাম ছিল আড়াইশো টাকা। সোমবার থেকে পাইকারি বাজারে আলুর দাম ১০-১১ টাকা হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ বস্তা হিসেবে দাম দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। কিছু দিনে খুচরো বাজারেও এই দামের প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন তাঁরা।
জলপাইগুড়ি জেলা কৃষি দফতরের সহকারী অধিকর্তা মেহেফুজ আহমেদ বলেন, “হিমঘরে রাখতে না পারলে আলু পচে যাবে। তাই প্রথম দিকে কৃষকরা বেশি করে আলু বিক্রি করে দিতে চেয়েছেন।” কৃষি দফতরের হিসেবে এ বছর উত্তরবঙ্গে অতিরিক্ত ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। যার ফলে উৎপাদন বেড়েছে ১০০ কোটি কেজিরও বেশি। এই আলুর কিছু অংশ নেপাল, বিহার-সহ ভিন্ রাজ্য গিয়েছে। গিয়েছে দক্ষিণবঙ্গেও। তার পরেও অতিরিক্ত আলু খোলা আকাশের নীচে পড়েছিল। কিছু জলের দরে বেচেছেন চাষিরা। কিছু বস্তা বোঝাই করে ঘরে রেখেছেন।
জলপাইগুড়ির আলু চাষি অহিদুল ইসলাম বলেন, “চোখের সামনে কেজি কেজি আলু পচে যাচ্ছে। কিছু করার নেই। হিমঘরে রাখতে পারলে বাঁচানো যেত। কিন্তু তার উপায় নেই।’’