সংগঠনের লোক নিয়েই ভোট-যুদ্ধে সিপিএম

কঠিন সময়ে এলাকায় সংগঠনের কাজ করছেন, এমন মুখকেই আগামী লোকসভা ভোটে প্রার্থী হিসেবে বেছে নেওয়ার কথা হচ্ছে।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:২২
Share:

প্রতীকী ছবি।

ক্ষমতা থেকে দল এখন দূরে। সরকার চালানোর জন্য আলাদা মুখ রাখার চেয়ে সংগঠন চালানোই বেশি জরুরি এখন। তাই এ বার লোকসভা ভোটের লড়াইয়েও সংগঠনের লোক জনকে সামনে রাখতে চাইছে সিপিএম। শুরু হয়েছে ভোট এবং সংগঠন আলাদা রাখার চিরাচরিত নীতি থেকে সরে আসার ভাবনা। কঠিন সময়ে এলাকায় সংগঠনের কাজ করছেন, এমন মুখকেই আগামী লোকসভা ভোটে প্রার্থী হিসেবে বেছে নেওয়ার কথা হচ্ছে।

Advertisement

রাজ্যে সিপিএমের লোকসভা সাংসদ এখন মাত্র দু’জন— মহম্মদ সেলিম ও বদরুদ্দোজা খান। ফলে, বাকি আসনে মুখ বদলানো এখন সিপিএমের পক্ষে সহজ। গত বার লোকসভা ভোটে দাঁড়িয়ে যাঁরা হেরেছেন, তাঁদের মধ্যে বাসুদেব আচারিয়া, অসীম দাশগুপ্তের মতো নেতারা আর প্রার্থী হবেন না। আবার গত বার প্রার্থী ছিলেন, তাঁদের কেউ কেউ মাঝের কয়েক বছরে সংগঠনে গুরুদায়িত্ব পেয়ে গিয়েছেন। যেমন, ডায়মন্ড হারবারের প্রাক্তন সাংসদ ও প্রার্থী শমীক লাহিড়ী এখন সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক। কিন্তু সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থাকলেই তাঁরা প্রার্থী হতে পারবেন না— আগামী লোকসভা ভোটে এমন কিছু কড়া রূপরেখা রাখতে চাইছে না আলিমুদ্দিন।

সিপিএম সূত্রের বক্তব্য, এখন কঠিন সময়ে যাঁরা নানা প্রতিকূলতার মধ্যে দল করছেন এবং সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করছেন, তাঁরাই ‘প্রকৃত সম্পদ’। ভোটের সময়ে এঁদের সামনে রেখে এগোনোই ভাল। তা ছাড়া, এখন আর ভোট টানার জন্য আলাদা মুখও নেই সিপিএমের হাতে। সম্প্রতি মহেশতলা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে প্রার্থী করা হয়েছিল প্রভাত চৌধুরীকে। যিনি জেলা সংগঠনেও সামনের সারির মুখ। এ ভাবেই শুধু প্রার্থীর ‘কার্যকারিতা’ বিবেচনায় রেখেই প্রাথমিক তালিকা তৈরির কাজে হাত দিতে চায় সিপিএম। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য সাধারণত একটা রূপরেখা হয়। এখনও তেমন কিছু হয়নি। তবে সংগঠনে থাকলে ভোট থেকে একেবারে দূরে থাকতে হবে, এমন কোনও বাধানিষেধ মেনে সম্ভবত চলা হবে না।’’

Advertisement

শুধু সিপিএমই নয়, লোকসভা ভোটে মুখ বদল হবে শরিক দলেরও। তবে কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের শেষ পর্যন্ত আসন সমঝোতা হচ্ছে কি না, তার উপরে নির্ভর করছে আসনভিত্তিক প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ। এবং সিপিএমের রাজ্য কমিটি লোকসভাতেও ‘হাত’ ধরার পক্ষে সওয়াল করায় অশনি সঙ্কেত দেখতে শুরু করেছেন শরিক দলের নেতৃত্ব! তাঁদের আশঙ্কা, তাঁদের ভাগের আসন আবার না কাটা পড়ে! ফরওয়ার্ড ব্লকের নরেন চট্টোপাধ্যায়, সিপিআইয়ের স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বা আরএসপি-র ক্ষিতি গোস্বামীরা চাইছেন, গত বিধানসভা ভোটের অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি না করে এ বার হাতে সময় থাকতেই বামফ্রন্টে খোলাখুলি আলোচনা হোক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement