প্রতীকী ছবি।
দলের নিয়ম মেনে দুই জেলা সম্পাদক পদে বদল ঘটানোর কথা। কিন্তু ‘পরিস্থিতি’র চাপে দুই জেলাতেই আপাতত স্থিতাবস্থা বজার রাখার সিদ্ধান্ত নিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হয়ে যাওয়ার পরেও আপাতত দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও নদিয়া জেলা সম্পাদকের দায়িত্বে যথাক্রমে শমীক লাহিড়ী ও সুমিত দে-কে বহাল রাখছে সিপিএম।
কান্নুরে দলের ২৩তম পার্টি কংগ্রেসে সিপিএমের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হয়েছেন শমীক ও সুমিত। জেলা সম্পাদক হিসেবে তাঁরা দলের রাজ্য কমিটির সদস্য তো বটেই, এ বারের নতুন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতেও দু’জনের জায়গা বহাল রয়েছে। সিপিএমের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী একসঙ্গে তিন স্তরের কমিটিতে থাকা যায় না। সেই মতোই দুই জেলায় সম্পাদকের পদে পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা হয়েছিল। কিন্তু সিপিএম সূত্রের খবর, নদিয়া জেলায় এই মুহূর্তে বিকল্প কোনও মুখকে দায়িত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দিয়েছে। তাই সুমিতকেই জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে যাওয়ার বার্তা দিয়েছে দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী। আবার মুখ্যমন্ত্রী সম্প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছেন, রাজ্যে বর্তমান জেলার বিন্যাস ভেঙে আরও কিছু নতুন জেলা তৈরি হবে। সিপিএম নেতৃত্বের ধারণা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার মতো দুই বড় জেলাই ভাগ হতে পারে। তখন সেই নতুন জেলায় সাংগঠনিক কমিটি তৈরি করতে হবে। সেই সম্ভাবনা মাথায় রেখে আপাতত দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদক হিসেবে শমীকই কাজ চালাবেন।
বারুইপুরে বৃহস্পতিবার দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তী, কল্লোল মজুমদারদের উপস্থিতিতে সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা কমিটির বৈঠকে নতুন জেলা সম্পাদকমণ্ডলী গঠন করা হয়েছে সম্পাদক অপরিবর্তিত রেখেই। মোট ১৫ জনের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে আমন্ত্রিত সদস্য দু’জন। পূর্ণাঙ্গ ও আমন্ত্রিতদের মধ্যে যাদবপুর ও কাকদ্বীপ থেকে এক জন করে মোট দু’জন নতুন মুখকে জায়গা দেওয়া হয়েছে। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দু’জনকে পাকাপাকি ভাবে জেলার দায়িত্বে রেখে দিতে গেলে পলিটবুরোর বিশেষ অনুমোদন লাগবে। গৌতম দেবকে উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদক করার সময়ে যা নেওয়া হয়েছিল। এখন তেমন কিছু করার পরিকল্পনা নেই। পরিস্থিতির খাতিরে আপাতত কাজ চালানোর ব্যবস্থা হয়েছে। পরিবর্তনের জন্য কিছুটা সময় নেওয়া হচ্ছে।’’
দক্ষিণের পরে আলিমুদ্দিনের আপাতত নজর উত্তর ২৪ পরগনার দিকে। সম্মেলনের এ বার ওই জেলায় জেলা কমিটি গঠনকে ঘিরে লম্বা ভোটাভুটির প্রক্রিয়া চলেছিল। রাজ্যে ক্ষমতা হারানোর এত বছর পরেও উত্তর ২৪ পরগনায় দল যে ভাবে একাধিক শিবিরে বিভক্ত তা চিন্তায় রেখেছে আলিমুদ্দিনকে। সব শিবিরের মতকে এক জায়গায় এনে নতুন জেলা সম্পাদকমণ্ডলী তৈরি করতে চাইছেন রাজ্য নেতৃত্ব। তার জন্য আগামী জেলা কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে আগামী ৪ জুন।