প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে সিপিএম মুখপত্রের অনুষ্ঠান। ভার্চুয়াল সম্প্রচার ।
প্রশাসনিক দফতরে গিয়ে শুধু বিক্ষোভ দেখিয়ে বা দাবিপত্র দিয়ে চলে আসা নয়। দাবি আদায়ের জন্য এ বার লাগাতার ধর্না-অবস্থানে যাওয়ার ডাক দিল সিপিএম। দিল্লির সীমানায় এক বছর ধরে অবস্থান করে যে ভাবে কেন্দ্রীয় সরকারকে দাবি মানতে বাধ্য করেছে কৃষকদের যৌথ মঞ্চ, সেই উদাহরণই সামনে রাখছেন সিপিএম নেতৃত্ব।
দলের দৈনিক মুখপত্রের ৫৬তম প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে সোমবার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের বার্তা, ‘‘কৃষকদের আন্দোলন অনেক বড় দাবি নিয়ে ছিল। কেন্দ্রীয় কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবি নিয়ে নেমেছিলেন তাঁরা। দিল্লিতে এক বছর ধরে বসে থেকে কেন্দ্রের সরকারকে তাঁরা যদি দাবি মানতে বাধ্য করাতে পারেন, তা হলে ব্লক, পুরসভা বা পঞ্চায়েত স্তরে ছোট ছোট দাবি আমরা আদায় করতে পারব না কেন? বিভিন্ন স্তরে দাবি আদায়ের জন্য আমাদের বসে থাকতে হবে, অবস্থান চালাতে হবে।’’ সূর্যবাবু উল্লেখ করেছেন, তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের আমলে বামেদের কয়েকটি নবান্ন অভিযান হয়েছে। তাতে পুলিশের আক্রমণ হয়েছে, বাম কর্মী-সমর্থক ‘শহিদ’ও হয়েছেন। কিন্তু দাবি আদায় হয়নি। জেলা বা আরও স্থানীয় স্তরে ব্লক, পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রেও বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়েছে। এ বার সেই ধরনের কর্মসূচিকেই দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ধারালো করার ডাক দিয়েছেন সূর্যবাবু। করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় মুখপত্রের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান ছিল ভার্চুয়াল। প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে এ দিন দর্শক প্রবেশ করানো হয়নি।
পাশাপাশিই সূর্যবাবু এ দিন মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘কলকাতার পুরভোটে আমাদের ফল আগের তুলনায় একটু ভাল হয়েছে মানে এই নয় যে, বিজেপি একেবারে শক্তিহীন হয়ে পড়েছে। রাজ্যে বিজেপি এখনও দ্বিতীয় শক্তি। তৃণমূলের পাশাপাশি বিজেপির বিরুদ্ধেও তীব্র লড়াই চলবে।’’
করোনার ফের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ মোকাবিলায় রাজ্য সরকার যে সব বিধিনিষেধ জারি করেছে, তার অনেক ক্ষেত্রেই যুক্তির অস্পষ্টতা নিয়ে সরব হয়েছেন সূর্যবাবু ও বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। সূর্যবাবুর মন্তব্য, ‘‘এ রাজ্যে পানশালা খোলা থাকে আর পাঠশালা বারেবারে বন্ধ হয়!’’ আর কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে বিমানবাবুর আহ্বান, ‘‘জানি না, এই পরিস্থিতিতে বাকি পুরভোট হবে কি না। যদি হয়, তা হলে কলকাতায় যে ভাবে জালিয়াতি, ভোট লুঠ হয়েছে, মাটি কামড়ে তার প্রতিরোধ করতে হবে। এক জন এসে ১০ জন মৃত ভোটারের ভোট দিয়ে যাবে— এটা হতে দেওয়া যাবে না!’’