প্রতীকী ছবি।
বাংলায় বিধানসভা ভোটে বেনজির বিপর্যয়ের পরে জোট সংক্রান্ত নির্বাচনী কৌশলের প্রশ্নে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে পাশে পেয়েছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। কিন্তু সংগঠনের বেহাল দশার জন্য দলের কেন্দ্রীয় কমিটির রোষের মুখে পড়েছে তারা। রাজ্যে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই চালানোর জন্য সংগঠনে রদবদল জরুরি বলেই মনে করছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এই পরিস্থিতিতেই আজ, বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে সিপিএমের দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠক। আসন্ন সম্মেলন-পর্বে কী ভাবে সংগঠনের খোলনলচে বদলানো যায়, তার রূপরেখা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হওয়ার কথা ওই বৈঠকে। রাজ্য কমিটির এই বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারম ইয়েচুরিরও।
আগামী মাসের শেষ দিক থেকেই রাজ্যে সিপিএমের সম্মেলন প্রত্রিয়া শুরু হবে। শাখা স্তর থেকে শুরু হয়ে জেলা হয়ে রাজ্য সম্মেলন হওয়ার কথা আগামী জানুয়ারিতে। সম্মেলনের ওই পর্বে বিভিন্ন কমিটি কী ভাবে ঢেলে সাজা হবে, তার রূপরেখা নিয়ে বুধবার দিনভর আলোচনা হয়েছে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে। সব ধরনের কমিটিতেই এ বার তরুণ মুখের গুরুত্ব অনেক বাড়ানোর নীতি নিয়েছে আলিমুদ্দিন। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশও তা-ই। সেই ভাবনা মাথায় রেখেই সম্মেলনের জন্য রূপরেখা তৈরি হচ্ছে।
সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বের একাংশও চাইছেন, ভোটে শূন্য হয়ে যাওয়ার পরে এখন হাত খুলে সংগঠনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে নতুনদের হাতে যথাসম্ভব ভাব ছেড়ে দিতে। সিপিএমের সাংগঠনিক নিয়ম অনুযায়ী, কোনও কমিটির সম্পাদক তিন দফায় পদে থাকতে পারেন। সেই মেয়াদ না ফুরোলেও দলের অন্দরে রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের মনোভাব, রাজ্য নেতৃ্ত্বের শীর্ষ স্তরেও রদবদল আসুক। দলের প্রয়াত নেতা ও বিধায়ক রবীন মণ্ডলের স্মরণসভায় গিয়ে গৌতম দেবও জোরালো সওয়াল করেছেন সাংগঠনিক রদবদলের। তাঁর মতে, ‘কাজের লোক’ এবং তরুণদের প্রাধান্য দেওয়া হোক। বাকিরা পিছনে থাকুন। তবে রাজ্য নেতৃত্বের শীর্ষ স্তরে পরিবর্তনের স্পষ্ট কোনও পরিকল্পনা এখনও তৈরি হয়নি আলিমুদ্দিনে। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘রদবদলে আপত্তি তেমন নেই কোথাও। তবে প্রশ্নটা হল, সব পুরনো মুখ সরে গেলে একসঙ্গে এত তরুণ বিকল্প কি পাওয়া সম্ভব? সব দিক মাথায় রেখেই এগোতে হবে।’’
কোভিড-বিধি মেনে এ বার রাজ্য কমিটির বৈঠক হবে সশরীর উপস্থিতিতে। তার জন্য প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে বৈঠক বসবে। দলের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই-এর রাজ্য সম্মেলন রয়েছে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে রায়গঞ্জে। যুব সভানেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের মতো নেত্রীকে ওই সংগঠনেই আর এক দফায় রাখা হবে না কি বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হবে, দলের অন্দরে আলোচনা চলছে তা নিয়েও।