Kolkata East West Metro

CPM-Congress: শুরু বুদ্ধ-প্রণবদের হাতে, পাল্টা সরব বাম-কংগ্রেস

বিজেপি ও তৃণমূলের টানাটানির মধ্যেই ‘ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের সাতকাহন’ নামে একগুচ্ছ তথ্য প্রকাশ করেছে সিপিএম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২২ ০৬:৩৩
Share:

ইস্ট - ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়।

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পরিষেবা শিয়ালদহ পর্যন্ত সম্প্রসারণের সূচনা ঘিরে তরজায় জড়িয়েছে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস। বিতর্ক বেধেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ওই সূচনা অনুষ্ঠানে শেষ মুহূর্তে আমন্ত্রণ নিয়েও। কেন্দ্র ও রাজ্যের দুই শাসক দলের চাপান-উতোরের মাঝেই পুরনো তথ্য সামনে এনে সিপিএম মনে করিয়ে দিল, কলকাতায় ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের শুরু হয়েছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং প্রয়াত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে। কেন্দ্রে তখন মনমোহন সিংহের ইউপিএ-১ সরকার। অথচ এখন বিজেপি এবং তৃণমূল প্রকল্পের ‘কৃতিত্ব’ নিতে ব্যস্ত বলে তাদের দাবি। সিপিএমের এই বক্তব্যের পাশে দাঁড়িয়েছে কংগ্রেসও। তবে ইতিহাস স্মরণ করালেও সোমবারের অনুষ্ঠানে যথাযথ ভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেছে সিপিএম।

Advertisement

বিজেপি ও তৃণমূলের টানাটানির মধ্যেই ‘ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের সাতকাহন’ নামে একগুচ্ছ তথ্য প্রকাশ করেছে সিপিএম। সমাজমাধ্যমেও প্রচার চালানো হচ্ছে ওই প্রকল্পের গোড়ার কথা। যার মূল বক্তব্য, ২০০৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিলেন বুদ্ধবাবু ও প্রণববাবু। তখন কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ উদ্যোগে নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের হাতে ছিল প্রকল্প। গোড়ায় এই প্রকল্প রেলের ছিল না, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও রেলমন্ত্রী ছিলেন না। সিপিএম ও কংগ্রেস, দু’দলেরই দাবি, ইউপিএ-২ সরকারে রেলমন্ত্রী হয়ে তৃণমূল নেত্রীই এই মেট্রো প্রকল্প রেলের হাতে নিয়ে যান। তার পরে মেট্রোর পথ পরিবর্তন করতে গিয়ে প্রকল্পে বিলম্ব ঘটে, খরচও বাড়ে। এখনও প্রকল্প সম্পূর্ণ হয়নি, বরং মধ্য কলকাতায় একাধিক বাড়িতে ফাটল ধরা পড়ে কাজে বাধা পড়ছে।

কলকাতার মেয়র ও রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ দাবি করেছেন, এই মেট্রোর সব কিছুই মমতার করা। বিজেপি এখন ‘কৃতিত্ব’ নিতে চাইছে। এই দাবি নস্যাৎ করে এবং দু’দলকেই বিঁধে সিপিএমের পলিটবুরো সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্রের বক্তব্য, ‘‘প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ছিল ৮ বছর আগে। কাজ শুরু বামফ্রন্টের সময়েই। মমতার বাধাতেই প্রকল্পে কালক্ষেপ। আর কেন্দ্রের মোদী সরকার ক্ষমতায় বসে ব্যসস্ত ইতিহাস থেকে নেহরুদের নয়তো বামপন্থীদের নাম মুছতে!’’

Advertisement

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এবং প্রাক্তন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীও এ দিন বহরমপুরে বলেছেন, ‘‘এই প্রকল্প শুরু হয়েছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আমল থেকে। মূল ভাবনা তাঁর ছিল। ইউপিএ থেকে তখন বামপন্থীরা সমর্থন তুলে নিলেও প্রণববাবু রাজ্যের উন্নয়নের স্বার্থে সহায়তা করেছিলেন। পরে সেটা জোর করে রেলের প্রকল্প করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন ডাকলে বুদ্ধদেববাবুকেও ডাকতে হতো।’’ তিনি রেলের প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন ইউপিএ সরকারের শেষ বাজেটে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল বলেও জানিয়েছেন অধীরবাবু।

সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী অবশ্য বলেছেন, ‘‘বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী যখন রেলমন্ত্রী ছিলেন, তখন রেলের অনুষ্ঠানে এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ডাকা হয়নি। এখন বুঝতে পারছেন, সেটা অন্যায় হয়েছিল? আগে যা-ই হয়ে থাকুক, আমরা তবু বলছি এ দিনের অনুষ্ঠানে যথাযথ ভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ করা উচিত ছিল।’’

তৃণমূলের কুণালের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর নামে একটা ‘কার্ড ফেলে দিয়ে’ দায় সেরেছে মেট্রো রেল! সেই সঙ্গেই সিপিএমের উদ্দেশে তাঁর জবাব, ‘‘মেট্রো রেলের সূচনা করেছিলেন বরকত গনি খান চৌধুরী। আর তার যাবতীয় সম্প্রসারণ ও নতুন পরিকল্পনা এবং রূপায়ণ তো রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। সিপিএম কোথায় কী ছবি তুলে রেখেছে, তা দিয়ে কি ইতিহাস বদলে যাবে?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement