কঠিন সময়ে সংগঠনের ছাঁচ ভেঙে পুরনো কায়দায় ফিরতে চাইছে তারা। কিন্তু সংগঠনের সেই পুনর্গঠন করতে গিয়ে মাথাচাড়া দিয়েছে নতুন সমস্যা। আর তার মধ্যে স্বয়ং বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পুরনো এবং বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর বর্তমান কেন্দ্র যাদবপুরে নিচু তলার কিছু নেতা-কাউন্সিলরের বিদ্রোহে রীতিমতো বিব্রত সিপিএম!
লোকাল ও জোনাল কমিটি ভেঙে মিশিয়ে দিয়ে এখন নতুন এরিয়া কমিটি তৈরি হচ্ছে সিপিএমে। সারা রাজ্য জুড়েই এরিয়া কমিটির গঠনের আগে তৈরি হচ্ছে প্রস্তুতি কমিটি। সেই পথেই কলকাতা পুরসভার ১০৩, ১০৪ ও ১০৯ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে একটি এবং ১০১, ১০২ ও ১১০ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে আর একটি কমিটি গঠন ঘিরে যাদবপুরে সিপিএমের অন্দরে দেখা দিয়েছে তীব্র সমস্যা।
প্রথমটির ক্ষেত্রে ১৬ জনের প্রস্তুতি কমিটি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই সদ্য মনোনীত ৭ জন সদস্য সভাকক্ষ ত্যাগ করে বেরিয়ে গিয়েছেন। দলীয় সূত্রের খবর, ওই ৭ জনের মধ্যে এলাকার একমাত্র সিপিএম কাউন্সিলর, ১০৩ নম্বর ওয়ার্ডের নন্দিতা রায়ও আছেন। অন্যেরা হলেন, ধ্রুব দাস, সৌগত পাল, অভিষেক দে, সুমন সেনশর্মা, তমাল দেব এবং তিকনাই চক্রবর্তী। মঞ্চে তখন উপস্থিত জেলার তিন ডাকসাইটে নেতা শমীক লাহিড়ি, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় এবং সঞ্জয় পূততুণ্ড। সিপিএমের প্রবীণ নেতা প্রদীপ দত্তকে প্রস্তুতি কমিটিতে না রাখারই প্রতিবাদ করেছেন ৭ জন।
দ্বিতীয় প্রস্তুতি কমিটি ঘিরেও জলঘোলা শুরু হয়েছে দলের অন্দরে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের নেতাদের একাংশের মতে, ওই এলাকায় বিতর্কিত নেতা খোকন ঘোষ দস্তিদারের প্রভাব এখনও অটুটু। ওই নেতাদের অভিযোগ, মূলত খোকনবাবুর পছন্দ-অপছন্দেরই প্রতিফলন ঘটেছে কমিটি গঠনে। সিপিএমের জেলা কমিটির এক নেতার কথায়, ‘‘খোকনবাবু নিজের অস্তিত্ব বজায় রাখতে তাঁর বিরোধিতা করবেন, এমন নেতাদের বাদ দিয়েছেন। নিজেদের লোক রাখতে গিয়ে এরিয়া প্রস্তুতি কমিটির গড় বয়স ষাটেরও বেশি! কমিটিতে যুব সংগঠনের এক জন প্রতিনিধিও নেই। নেই ওই তিন ওয়ার্ডের মধ্যে একমাত্র নির্বাচিত কাউন্সিলর রিঙ্কু নস্করও।’’
এমন গোলমালে যথেষ্টই অস্বস্তিতে জেলা সিপিএম নেতৃত্ব। জেলার এক নেতার কথায়, ‘‘প্রথম এরিয়া কমিটির ঝামেলা অভিনব। বিষয়টি নিয়ে এখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। জেলা কমিটিতে আলোচনা করেই যা ঠিক করার, করা হবে।’’ আর যাদবপুরের বিধায়ক সুজনবাবু বলছেন, ‘‘নতুন কিছু করতে গেলে একটু-আধটু সমস্যা সব জায়গাতেই হয়। এই জেলায় তো সমস্যা আরও কম! যা আছে, এ মাসেই মিটে যাবে।’’